গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ইসলামপুর মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় বুধবার (২২ মে) রাতে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজে ঘরের ভেতর আগুন লেগে নিহত হন একই পরিবারের চার জন। তাদের লাশ বৃহস্পতিবার (২৩ মে) পটুয়াখালীর বাউফলে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন শাহ আলম ওরফে মামুন মৃধা, তার স্ত্রী মুনিরা বেগম মুন্নি, দুই সন্তান; তৃতীয় শ্রেণী পড়ুয়া মো. বায়েজিদ ও শিশু শ্রেণী পড়ুয়া ফাতেমা আক্তার।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় নিহতদের লাশ গাজীপুর থেকে গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সূর্যমনি ইউপির কালিকাপুর গ্রামে পৌঁছায়। এ সময় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পরে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাদেরকে দাফন করা হয়।
মুন্নির ছোট ভাই তরিকুল ইসলাম তারেক জানান, বোন ও দুলাভাইয়ের সাথে তিনিও গাজীপুর থাকতেন এবং একই গার্মেন্টেসে চাকরি করতেন।
তারেক বোনের বাসায়ই সব সময় খাওয়া দাওয়া করতেন। বুধবারও ইফতার ও রাত ৯টায় খাবার খান বোনের বাসায়। খাওয়া-দাওয়া শেষে সেহরির জন্য তরকারি গরম করতে গেলে রান্নার গ্যাস শেষ হয়ে যায়।
একপর্যায়ে মামুন ও তারেক দোকান থেকে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে আসেন। ঐ গ্যাস সিলিন্ডার চুলার সাথে সংযোগ দিচ্ছিলেন মামুন। তখন মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তখন মুন্নি, বায়েজিদ ও ফাতেমা বিছানায় শুয়ে ছিল।
কেউ আর ঘর থেকে বের হতে পারেনি। তারেক ফোনে কথা বলছিলেন ঘরের সামনে বসে। সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর তারেক চেষ্টা করেছিলেন ঘরের মধ্যে ঢুকতে। কিন্তু ব্যর্থ হন, তার হাতও পুড়ে যায়।
তারেক বলেন, ‘বোন, দুলাভাই, ভাগ্নে, ভাগ্নি- এদের শুধু কয়লা নিয়ে এসেছি।’ এসব কথা বলে বারবার তারেক কান্নায় ভেঙে পড়েন তারেক।
তারেক আরও বলেন, ‘ঘটনার কিছুক্ষণ পর আমি অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম। পরে জ্ঞান ফিরেছে। আমাদের গার্মেন্টস কোম্পানি এনএসআর এ্যাপারেলস লিমিটেড লাশ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।’
সুর্যমনি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাচ্চু বলেন, ‘আমি উপস্থিত ছিলাম জানাজা নামাজে। খুবই নিরিহ স্বভাবের লোক ছিলেন মামুন।’