হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে কামাল মিয়া (২৫) নামে এক যুবককে হাওরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার স্বজনদের বিরুদ্ধে।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কামাল মিয়া উপজেলার হরিপুর গ্রামের ফুল মিয়ার ছেলে।
রাতে কামাল মিয়ার ক্ষত-বিক্ষত লাশ নিয়ে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে আসেন দুই নারী। তাদের একজন কামাল মিয়ার মা ও অপরজন খালা বলে দাবি করে।
হাসপাতালে তারা জানান, সোমবার কামাল মিয়াসহ তিনজন গুঙ্গিয়ারজুরি হাওয়ে একটি খাল সেচে মাছ ধরতে যান। এ সময় কয়েকজন লোক দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই কামাল মিয়া মারা যায়। তার সঙ্গে থাকা অন্য দুইজন পালিয়ে গেছে। এ সময় তাদের ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের বাঁধা প্রদান করেন। এ ছাড়া তাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক হওয়ায় সাংবাদিকরা একাধিক প্রশ্ন করলে খালা পরিচয়ধারী নারী উত্তেজিত হয়ে উঠেন।
কিছুক্ষণ পর সদর হাসপাতালে আসেন সহকারী পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) শেখ সেলিম। তখন কৌশলে ওই দুই নারী হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হরিপুর গ্রামের বজলু মিয়ার ছেলে ফজল মিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল একই গ্রামের ফুল মিয়ার ছেলে সালমান মিয়ার। গত ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় তুচ্ছ বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে সালমান মিয়ার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে ফজল মিয়ার বুকে আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা। এ ঘটনায় ১০ নভেম্বর নিহত ফজল মিয়ার বাবা বজলু মিয়া বাদি হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে বানিয়াচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সালমান মিয়াসহ দুইজন এখনও জেলে। অন্যরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন।
নিহত কামাল মিয়া ফজল মিয়া হত্যা মামলার ১২ নাম্বার আসামী। নাম-পরিচয় গোপন করার শর্তে স্থানীয়দের অনেকেই জানিয়েছেন, নিহত কামাল মিয়া সহজ-সরল প্রকৃতির মানুষ। ফজল মিয়াকে খুন করার পর ফুল মিয়া গংরা ওই খুন ঢাকার জন্য এবং প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য নিজেরাই কামাল মিয়াকে খুন করেছে।
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (বনিয়াচং সার্কেল) শেখ সেলিম রাত দশটায় হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। হাসপাতালে নিহতের স্বজনদের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে মামলা করা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’