টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে লাখ লাখ মুসল্লির কণ্ঠে আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন ধ্বনিত হয়ে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।বিশ্বের প্রায় ৬১টি দেশ থেকে বিশ্ব ইজতেমায় শরিক হন লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষ। এছাড়া দেশের প্রায় সব জেলা থেকে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেন মুসল্লিরা।
রোববার (১২ জানুয়ারি) সকালে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। চলে ঘণ্টাব্যাপী। আখেরি মোনাজাত শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে ইজতেমায় আসা ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
মুসল্লিদের বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসন নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে টঙ্গী-আশুলিয়া ইপিজেড মহাসড়কে প্রবেশ করতে পারেনি ঢাকাগামী কোনো যান। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বাইপাইল থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত সড়কটি। হেঁটেই রওনা করেছেন মুসল্লিরা। যাওয়ার জন্য অধির আগ্রহে খুঁজছেন তাদের পরিবহন। তবে গাড়ি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাইপেল থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত মহাসড়কে নেই গণপরিবহন। মহাসড়কটি পুরোপুরি ফাঁকা।
ইজতেমায় শরিক হওয়া মুসল্লি আবিদ যাবেন মানিকগঞ্জ। কোন পরিবহন না থাকায় হেঁটেই রওনা করেছেন। তিনি জানান, 'হেঁটে হেঁটে যাওয়া যাচ্ছে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। এই রোডে গণপরিবহন প্রবেশ করলে পায়ে হেঁটে সারাদিনেও বাইপাইল পর্যন্ত যাওয়া যেত না। আশুলিয়া থেকে বাইপাইল পর্যন্ত হেঁটে গেলেও নবীনগরে গিয়ে বাস পাওয়া যাবে।'
আরেক মুসল্লি ইয়াছিন, যাবেন টাঙ্গাইল। তিনি বলেন, 'আমার বয়স হয়েছে হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে। রিক্সা ভ্যান খুঁজছিলাম পাইলে আমার জন্য ভাল হত। এখানে পুরো সড়ক মানুষে ভরে গেছে রিক্সা খুঁজলেও তো আর পাওয়া যাবে না। কষ্ট করে আর একটু হাঁটলে হয়তো পাওয়া যেতে পারে। যত কষ্টই হোক বিশ্ব ইজতেমায় শরিফ হয়েছে এটাই বড় কথা।'
এই ব্যাপারে আশুলিয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ মশিউর রহমান জানান, ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী মুসল্লিদের বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন করতে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কে ঢাকাগামী কোনো যান প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পায়ে হেঁটেই মানুষ গন্তব্যে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছেন। কিছু সময় পরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। মুসল্লিদের সুবিধার জন্যই মহাসড়ক ফাঁকা রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, তাবলীগ জামাতের অনুসারীদের মধ্যে মতভেদের কারণে বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছিলো গাজীপুরের টঙ্গী তুরাগ তীরে তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। চলে ১০, ১১ ও ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত। ১২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় আজ এর প্রথম পর্ব। এরপর চারদিন বিরতি দিয়ে ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।