পল্লীকবি জসীম উদ্‌দীনের জন্মদিন আজ

, শিল্প-সাহিত্য

নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 19:19:53

পল্লীকবি জসীম উদ্‌দীনের ১২০তম জন্মদিন আজ শনিবার। ১৯০৩ সালের এই দিনে ফরিদপুর সদর উপজেলার তাম্বুলখানা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাংলা সাহিত্যের কীর্তিমান এই কবি গ্রামের মানুষের জীবন, সংস্কৃতি, তাদের সুখ-দুঃখ ব্যাপকভাবে তার কবিতা, নাটক ও গানে ফুটিয়ে তুলেছেন।

পল্লীকবির জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে ফরিদপুরের বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ৯টায় কবির সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ৯টা ১৫ মিনিটে কবির বাড়ির প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা এবং আলোচনা সভা শেষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ বিভাগ, জসীম ফাউন্ডেশন, শিল্পকলা একাডেমি, ফরিদপুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থা, ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ ফরিদপুর শাখা, কবির প্রতিষ্ঠিত আনসারউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয় কবির জন্মবার্ষিকী পালন করবে।

জসীম উদ্‌দীনের বাবা আনসার উদ্দিন মোল্লা ছিলেন স্কুলশিক্ষক। তার মায়ের নাম আমিনা খাতুন ওরফে রাঙাছুট। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকার সময়েই জসীম উদ্‌দীনের বিখ্যাত কবিতা 'কবর' বাংলা পাঠ্যবইয়ে স্থান পায়। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'রাখালী'। তার আরও ৪৫টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যচর্চা শুরু করেন তিনি।

১৯২৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ এবং পরে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৩১ সালে দীনেশচন্দ্র সেনের সঙ্গে লোকসাহিত্য সংগ্রহ কাজে চাকরি করেন। পরে ১৯৩৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা সহকারী হিসেবে যোগ দেন। ১৯৩৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৪৪ সালে ঢাবির চাকরি ছেড়ে সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার বিভাগে যোগ দেন।

জসীম উদ্‌দীনের নকশী কাঁথার মাঠ ও সোজন বাদিয়ার ঘাট বাংলা ভাষার গীতিময় কবিতার উৎকৃষ্টতম নিদর্শনগুলোর অন্যতম। তার কবিতা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তার লেখা অসংখ্য পল্লীগীতি এখোনো গ্রাম বাংলার মানুষের মুখে মুখে শোনা যায়। পল্লীগীতির মধ্যে আমার হার কালা করলাম রে, আমায় ভাসাইলি রে, বন্ধু কাজল ভ্রমরা রে অন্যতম।

১৯৭৬ সালের ১৪ মার্চ ৭৩ বছর বয়সে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ওই দিনই ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের পৈতৃক বাড়িতে ঐতিহাসিক ‘ডালিম গাছের’ তলায় তাকে দাফন করা হয়। গোবিন্দপুরে প্রতিবছর জানুয়ারি মাসে তার জন্মদিনকে স্মরণ করে জসীম মেলা নামে একটি পাক্ষিক উৎসব উদ্‌যাপন করা হয়। তার নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলের নামকরণ করা হয়েছে।

জসীম উদ্‌দীন প্রেসিডেন্টের প্রাইড অব পারফরমেন্স পুরস্কার (১৯৫৮), বাংলাদেশ সরকারের একুশে পদক (১৯৭৬) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে (মরণোত্তর, ১৯৭৮) ভূষিত হন। তিনি ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর