সাহিত্য সংস্কৃতির মহানাগরিক কামরুল ইসলাম

, শিল্প-সাহিত্য

নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 05:38:32

সাহিত্য সংস্কৃতির বিশ্বাভিমুখী অভিযাত্রীর নাম কামরুল ইসলাম। করোনাকালিন প্রতিকুল সময়ে তাঁর কর্মকাণ্ড নতুন নব উদ্যমে বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয়েছে। বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিশ্বসভায় সরব উপস্থিতি, বাংলা ভাষার লেখক শিল্পীর সম্প্রতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তিনি নিরন্তর প্রয়াস অব্যাহত রেখেছেন।

বিশ্বসভার অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা, মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পক্ষের রাজনৈতিক সচেতন বিশিষ্ট গবেষক কবি কামরুল ইসলাম সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার খলিল নগর গ্রামে ১৯৬৮ সালের ৩ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। কপিলমুনি সহচরী বিদ্যা মন্দির থেকে ১৯৮৪ সালে মাধ্যমিক, কপিলমুনি কলেজ থেকে ১৯৮৬ সালে কৃতিত্বেও সাথে উর্ত্তীণ হয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৬-৮৭ শিক্ষাবর্ষে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৯১ সালে স্নাতক সম্মান একমাত্র প্রথম শ্রেণী এবং ১৯৯২ সালে স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে ডিগ্রি অর্জন করেন।

কর্মজীবনের প্রথম পর্বে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ শিক্ষকতা শুরু করেন এবং ২০০০ সালে স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। স্বাধীন পেশা ব্যবসা ও বেসরকারী সংস্থারার সাথে জড়িত থেকে জীবন নির্বাহ করছেন।

ছাত্রজীবনে বামপন্থী রাজনীতি এবং নব্বইয়ে সামরিক স্বৈরাচার সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। বিশেষ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য গঠন এবং মৌলবাদী সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সাহসী পদক্ষেপ নেন। ১৯৮৮ সাল থেকে বর্তমান অবধি অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়ে আছে।

কলেজে শিক্ষকতার সময়কালে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক কমান্ড গঠন করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদান ছাত্রসমাজের ভেতর তুলে ধরার প্রয়োজনীয় কর্মসূচি পালনে অসামান্য অবদান রাখেন। লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর রচনা প্রতিযোগিতা এবং শ্রেষ্ঠদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে (১৯৯৯ সালে) তৎকালিন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

সাতক্ষীরা জেলায় অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-১ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচলনায় প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অনুমোদিত সংগঠন বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সাথে সম্পৃক্ত হন। বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।

ছাত্রাবস্থায় লেখালেখি এবং সাহিত্য সংস্কৃতির সংগঠনের সাথে ওতোপোতভাব্রে জড়িত ছিলেন। ২০১৬ সালে দেশের শীর্ষস্থানীয় কবি লেখক শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তোলেন বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ এবং সংগঠনের আর্ন্তজাতিক সভাপতি অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী, কেন্দ্রীয় সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এবং  তিনি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন । ২০১৮ সালের ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে সর্ববঙ্গীয় লেখক শিল্পী সম্মেলন এবং ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ, ১ ও ২ এপ্রিল ভারতের শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ভবনে ২১টি দেশের প্রতিনিধি নিয়ে ঐতিহাসিক প্রথম বিশ্বসভা সম্পন্ন করার তিনি মুখ্য দায়িত্ব পালন করেছিলেন। 

তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ: প্রবন্ধ: ১. রামমোহন রায়; সমাজ ও সাহিত্য, ২. বাঙালির আত্মপরিচয় ও অন্যান্য, ৩. প্রবন্ধ সংগ্রহ, ৪. আধুনিক বাঙালি রামমোহন রায়, খ. কাব্যগ্রন্থ: ৫. মা ও মনপাখি, ৬. কালের নটরাজ, ৭. গৌড়ীয় প্রেমলিপি।

উপন্যাস জয়জয়ন্তী, সম্পাদিত গ্রন্থ: আমাদের প্রিয় মানুষ; ছোটগল্প: আর্যসত্য, তাঁর সম্পাদিত গবেষণা পত্রিকা 'সুন্দরম' এবং সাহিত্য সাময়িকী 'বঙ্গীয়' প্রকাশিত হচ্ছে ।

প্রকাশিত হতে যাচ্ছে কাব্যগ্রন্থ “অমৃতের প্রেয়সী; প্রবন্ধ গ্রন্থ “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আর্ন্তজাতিক প্রসঙ্গ” “গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন ও স্মৃতিভাষ্য’ এবং “নবকালে কবি কাজী নজরুল ইসলাম’’।

তিনি ন্যাশনাল সোসাইটি ফর ডেমোক্রেসি নামক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক, বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য, ডিজাবেল্ড রিহ্যাবিলিটেশন রিসার্চ এসোসিয়েশন- ডিআরআরএ সংস্থার নির্বাহি সদস্য। এছাড়া রবীন্দ্র একাডেমি, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত আছেন। তিনি জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক বহু সভা, সেমিনার যোগ দিয়েছেন। তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তিনি বঙ্গীয় টেকনোলোজি গড়ে তুলেছেন।

বিশ্ব পরিসরে বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের পঞ্চাশ অধিক দেশে এবং বাংলাদেশের বিভিন্নজেলা ও অঞ্চলে শাখা কার্যক্রম বিস্তৃত করেছেন। দেশের বাহিরেকয়েকটি পত্র পকিায় তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া গ্রুপের বাংলা পত্রিকা, এই সময়” ২০২১ সালে তাঁকে মহানাগরিক” হিসেবে উল্লেখ করেন।

৩ মার্চ বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা ৩০ মিনিটে অনলাইনে বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের অফিসিয়াল পেইজ থেকে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর