দেব জ্যোতি ভক্ত’র একগুচ্ছ কবিতা

কবিতা, শিল্প-সাহিত্য

দেব জ্যোতি ভক্ত | 2023-08-30 23:22:14

এ ড্রিম মেম : নোবডি নোজ হার নেম

ক্যামন যেন বিশ্রী লাগছে, থমকে গেছে সময়
সুযোগ পেলে আমাকে ফেলো পুরনো নর্দমায়।

তোমার আমার গল্প নাই
নাই চুমু খাওয়ার স্মৃতি
অলসভাবে পড়ে আছে
মেঘকালো এ সম্মতি।

স্যাড ইমো ছাড়া কোনো
বৃত্ত আঁকার সাধ্য নাই
তবুও থেমে নাই ভয়ে
সাহস করে কুঁকড়ে যাই।

সহজ কোনো অংকের ভুলে
চাইছি তোমায় সব সংখ্যায়
বৃষ্টিপড়া ঘুমের ভেতর মন
উড়ে যায়, টেনে আনি শঙ্কায়।

তোমার ভেতর তোমার কান্না, তোমার তবু কিছু না
তোমার এমন ঘ্রাণ নাই, যা ছাড়িয়ে গেছে কল্পনা।

আবেগ কচলায়ে লেখা চিঠি

তোমারে লেখা চিঠিতে যেন বানান ভুল থাকে কয়েকটা। আর যেন থাকে বৃষ্টি দু-এক ফোঁটা। তারপর যদি ডাকবাক্স উড়ে যায়, নীল পাখিটা দূরে যায় আর ঘুমঘুম রাত পুড়ে যায়.. তবে তুমিও জানবে হয়তো, আমার লাল রঙের টয়োটো, ভিজে যায় জলে, প্রজাপতির কোলাহলে। গোপনে গোপনে।

দূরগামী ট্রেনে আমাদের মন ভেসে গেছে। রেখেছো খবর?

তোমার দু-দাঁতের মাঝখানে ফাঁকা ও সেখানে মাংস গেঁথে থাকা—ভীষণ যন্ত্রণা দিচ্ছে তোমাকে ইদানীং। অসময়ে বেজে ওঠে মোবাইলে রিং। দুপুরের লাঞ্চবক্স ছিঁড়ে গেছে ক্ষুধায়, এ কথাটি কেউ জানে না বোধহয়। অথবা সবাই জেনে গেছে, আমি বুঝি নাই। কিছু অপেক্ষার বাতাসে শ্বাস বোকার মতো খুঁজি নাই।

কখনো তোমার বুকে খোঁজোনি আমার ঘুম কোনো অসুখে। রেখেছো খবর?

নাম প্রকাশে ইচ্ছুক

পাখিদের পাঠশালা ফেরত
তোমার স্নানছোঁয়া জল ও আমার নদীভ্রমণ;
শীতের শ্বেতাঙ্গ স্রোত
নিকটবর্তী চিড়িয়াখানায় মৃত ময়ূরের প্রসাধন।

যাব না যাব না করেও যাওয়ার আগে

কান্না পাওয়া উচিৎ ছিল, কিন্তু পাচ্ছে না। চিৎকার করে ডাকছে দোকানদার, জিলাপির কেজি ১৮০; অথচ কেউ খাচ্ছে না।

ভাল্লাগছে না, বৃষ্টিথামা দুপুরটাতে। দুইটা শালিক দাঁড়ায়ে আছে বিলবোর্ডওয়ালা ফুটপাতে। পাশেই একটা চায়ের দোকান, অল্পদূরে জঙধরা ডাস্টবিন। দেওয়াল জুড়ে লালরঙের অনুরোধ—সমাবেশে যোগ দিন।

চৌরাস্তার ধারে দাঁড়ানো ট্রাফিক পুলিশটি বোঝে না কার কখন অফিস ছুটি। দুপুরের আয়নায় দূরগামী ক্ষুধার ঘুম—ভেঙে ফ্যালে মমতার মৌসুম।

শহরের গা ঘেঁষে এই মেঘলা মেঘলা দিন শেষে, জল জমা মন ছেড়ে ও উন্মাদ হাওয়ার হামাগুড়ি ছিঁড়ে হেরে যাওয়ার আগে হারায়ে যাওয়া ভালো। বিশ্রী কিছু বিষণ্ণতা ক্রমশ হচ্ছে জোরালো।

হয়তো কোথাও কারো জন্য, অপেক্ষা করে না কোনো যুদ্ধফেরত সৈন্য। তবুও দুপুর নামে, হুডতোলা রিকশাও থেমে থাকে জ্যামে; আর পাথরের পৃষ্ঠায় লেখা থাকে প্রিয় কোনো মানুষের নাম। এইসব মায়ার গল্প ছেড়ে দূরে চললাম।

জ্যাক ডেনিয়েল

মৃত্যু নিয়ে যা ভাবি—
তা একটি চায়ের দোকান, যেখানে শকুন ও কাক চা খায়

বিশ্বাস ভেঙে গেলে—
বিষাদের অগ্রজ বোন দাঁড়ায়ে থাকে চূড়ান্ত রূপকথায়।

বিনামূল্যে ব্রা আর পেন্টি বিতরণ কর্মসূচি
চামড়ার গন্ধ শুঁকে ঘর ছাড়ে অসংখ্য মুচি

সুখ আসে শোক যায়
পাড়ায় পাড়ায়

পাখি ওড়ে পাপ পড়ে
দুপুরে দুপুরে

এক্সকিউজ মি! আপনি কি কাস্টমার? নাকি ওয়েটার
এক পেগ সত্য দেন, বাকি গ্লাসে ঢালুন মিথ্যাওয়াটার

চুষে খাই সুখের বোঁটা
মূল্যবান প্রতিটি ফোঁটা

যতক্ষণ বেঁচে আছি, ততক্ষণই হবে শুধু বিপ্লব
জলঘেরা যৌবন, যতটা মমতায় ছিল শৈশব।

অলঙ্করণ শতাব্দী জাহিদ

এ সম্পর্কিত আরও খবর