ঢাকাস্থ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গেস্ট হাউজের জমি ক্রয়ে দুর্নীতিতে জড়িতদের বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন সিনেট ভবনের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্রগতিশীল ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ’র ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ঢাকায় গেস্ট হাউজের জমি ক্রয়ে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রশাসনের (অধ্যাপক মিজানউদ্দিন ও তাঁর নেতৃত্বাধীন) ঊর্ধ্বতন পদে থাকা শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রমাণও মিলেছে। সেই তদন্ত প্রতিবেদন উচ্চ পর্যায়ে জমা দেওয়া হলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে বিষয়টি অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
তারা আরও বলেন, রাবির শিক্ষকরা ঢাকায় অবস্থানকালে বিভিন্ন অসুবিধায় পড়েন। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় যে ভবনটি ক্রয় করেছে সেটি এখনও ঝুলে আছে। আবার নতুন করে বাড়ি ভাড়াও নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এসময় দুর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে দ্রুত গেস্ট হাউজের কার্যক্রম চালুর দাবি জানান তারা।
কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলাম, সমাজকর্ম বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন মন্ডল, শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক জুলকারনাইন, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এফএম আলী হায়দা, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীম হোসেন, ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রওশান জাহিদ, রাবি মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক ডা. রাজু আহমেদ, এমফিল ফেলো মতিউর রহমান মর্তুজা, বঙ্গবন্ধু প্রজন্মলীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমূখ। সঞ্চালনা করেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াছ হোসেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসন ঢাকায় জমিসহ ১৩ কোটি ২৬ লাখ টাকায় রাবির অতিথি ভবন ক্রয় করে। এতে জমির মূল্য ১১ কোটি এবং ভবন নির্মাণ ব্যয় দুই কোটি ধরা হয়। তবে টেন্ডার ছাড়াই কেনা ওই জমির মূল দলিলে জমির মূল্য সাড়ে ৩ কোটি টাকা উল্লেখ করা হয়। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে ১১ কোটি টাকা মূল্য দেখিয়ে অনুমোদন করা হয়। দলিল ও সিন্ডিকেটে অনুমোদন করা অর্থে ৮ কোটি টাকার গড়মিল ধরা পড়ে।
বিষয়টি নিয়ে ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই সিন্ডিকেট সভায় রাবির উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোলাম কবিরকে প্রধান করে তিন সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি তদন্ত করে জমি ক্রয়ে ৮ কোটি টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পায়। পরে তা প্রতিবেদন আকারে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জমা দেয়। একই সাথে হাইকোর্টের নির্দেশে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) অভিযোগ তদন্ত শুরু করে। তবে এখনও দুদক তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দিতে পারেনি।