ভোররাতে ফল প্রকাশ, ভিসির আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত

, ক্যাম্পাস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2023-08-31 07:26:04

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা চলমান অবস্থান কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করেছে।

মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আন্দোলন থেকে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা।

রাতেই শিক্ষার্থীদের এমএ ফার্স্ট সেমিস্টারের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে আজকের মধ্যে অন্য দাবি সমূহ মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।

আজ সকাল এগারোটায় কর্মসূচি স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী  আরমান শাহ্ উল্লাস।

তিনি জানান, সোমবার দুপুর থেকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। দুপুর গড়িয়ে রাত হলেও আমাদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কেউ কথা বলতে আসেনি। এমনকি কোনো কর্মকর্তা খোঁজও নেননি। একারণে আমরা শীতে জবুথবু হয়ে রাত জেগে ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালনে অনড় ছিলাম। রাত সাড়ে তিনটার দিকে উপাচার্য স্যার ফোন করে আমাদের খোঁজ খবর নেন। তার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আমরা অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে এসেছি। তবে আট দফা দাবির সবগুলোর বাস্তবায়ন আমরা চাই। অন্যথায় পরবর্তীতে আবারো ঘোষণা দিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করা হবে।

এদিকে সোমবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর থেকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিল ইংরেজি বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। এর আগে পরীক্ষা নেওয়া, ফলাফল প্রকাশসহ ৮ দফা দাবিতে তারা একাডেমিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন।

দিনভর স্লোগান শেষে শীতের কনকনে রাতেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যায়। রাত সাড়ে তিনটা পর্যন্ত তারা হেয়াত মাহমুদ ভবনের সামনে কাগজ বিছিয়ে তার উপর বসে-শুয়ে কর্মসূচি পালন অনড় থেকে সেখানে অবস্থান করেন। ওই সময় উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ মুঠোফোনে যোগাযোগ করে শিক্ষার্থীদের দাবি দফা মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন।

এদিকে অবস্থান কর্মসূচি পালনের প্রায় ১৭ ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীরা আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আজকের সভায় তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান শিক্ষার্থী আরমান শাহ্ উল্লাস।

কিছু দিন আগেও উপাচার্যের আশ্বাসের ভিত্তিতে এই শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিয়েছিল। কিন্তু আশ্বাসের সাত দিন পেরিয়ে গেলেও উপাচার্য তার দেয়া কথা না রাখায় সোমবার থেকে আন্দোলনে নামেন তারা। শিক্ষার্থী মারুফ ও ইউসুফ একথা জানান।

তাদের দাবি সমূহ- ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফার্স্ট সেমিস্টারের ফলাফল প্রকাশ, পরবর্তী সেমিস্টারের রুটিন প্রকাশ, ফাইনাল পরীক্ষার পর মনোগ্রাফ প্রকাশ, ইনকোর্স বাদ দিয়ে বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া, সিলেবাসে সংক্ষিপ্তকরণ, চলতি মাসের ১১ তারিখ হতে ২০ জানুয়ারির মধ্যে পরীক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন করা, সিনিয়র ব্যাচ অগ্রাধিকার প্রদান।

শিক্ষার্থী জিনিয়া শারমিন ও ফারহিন খন্দকার বলেন, আমাদের পরে যারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল, তাদের পড়াশোনা শেষ। কিন্তু আমাদের শেষ হয়েও শেষ হচ্ছে না। আমরা কি পাস করব না। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা চলে যাচ্ছে, তবুও ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারছি না। এর চেয়ে আর কোন দুঃখ নেই। আমরা ভিসি স্যারের আশ্বাসের ভিত্তিতে আন্দোলন স্থগিত করেছি। আশা করছি এবার ভিসি স্যার আমাদের আর হতাশ করবেন না। আমরা পরীক্ষা দিতে চাই, রেজাল্ট চাই।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ও রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তাফা কামাল ক্যাম্পাসে নেই। তারা দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিকভাবে অনুপস্থিত থাকছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর