জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নির্মাণাধীন একটি হল থেকে অলিউল্লাহ অলি (২৫) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) সকালে হলের সামনে থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নির্মাণাধীন হল থেকে পড়ে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের।
নিহত অলিউল্লাহ অলি ময়মনসিংহের তাইজুদ্দিন তাজুর ছেলে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন গেরুয়া গ্রামে বসবাস করতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ২২ নম্বর হলের সামনেই পড়ে ছিল অলির মরদেহ। তবে তিনি কীভাবে মারা গেছেন তা তাৎক্ষণিক নিশ্চিত করতে পারেননি তারা।
এদিকে নির্মাণাধীন হল এলাকার একটি সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, বুধবার রাত ৩টার দিকে তিনজন ব্যক্তি দেয়াল টপকে নির্মাণাধীন ২২ নম্বর হলে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে তারা দ্বিতীয় দফায় আবার প্রবেশ করেন। এরপর ৩টা ২৪ মিনিটের ফুটেজে দেখা যায়, মেঝেতে একজন লোক পড়ে আছে। তবে বাকি দুইজনের চেহারা সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যায়নি।
নির্মাণাধীন হলের কনস্ট্রাকশন কোম্পানির ম্যানেজার খোকন বলেন, সকাল ৬টার দিকে উঠে দেখি হলের সামনে একজনের মরদেহ পড়ে আছে। ধারণা করছি- হল থেকে বৈদ্যুতিক তার চুরি করতে গিয়ে শক খেয়ে নিচে পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে। যিনি মারা গেছেন তিনি আমাদের শ্রমিক নয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি।
চলমান পরিকল্পনা ও উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী নাছির উদ্দিন বলেন, সিসি টিভির ফুটেজ থেকে জানতে পেরেছি হলে প্রবেশ করেছে তিনজন। এর মধ্যে একজন মারা গেছে। তবে কীভাবে মারা গেছে নিশ্চিত করতে পারছি না। ধারণা করছি হল থেকে পড়ে মারা গেছে।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী নাসের বলেন, বিল্ডিং থেকে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। মাথায় বেশি আঘাত লেগেছে। আমরা মরদেহ উদ্ধার করে থানায় এনেছি। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
এদিকে গত ২৭ মে নির্মাণাধীন একই ভবনের ছয়তলা থেকে পড়ে শাহের আলী (২৫) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এরপর শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয় কনস্ট্রাকশন কোম্পানির বিরুদ্ধে। অভিযোগ মেনে নিহত শ্রমিকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয় কোম্পানি। তবে এখনো শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। ফলে ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছেন শ্রমিকরা।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী নাছির উদ্দিন বলেন, হলের ভেতরে কাজ করার সময় শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সরঞ্জামের ব্যবস্থা রাখা হয়। তবে বাইরের কাজে এখনো পুরোপুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কোনো হলে যদি একেবারে ব্যবস্থা না রাখে তবে আমরা সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিব।