চবিতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম ভাস্কর্য ‘জয় বাংলা’ উদ্বোধন

বিবিধ, ক্যাম্পাস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 21:48:23

প্রতিষ্ঠার প্রায় ৫১ বছরের পরে অবশেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) নির্মিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্য ‘জয় বাংলা’।

বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে তিনটায় শহীদ মিনারের সামনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দীন চৌধুরী আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনকালে উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের সকলকে ইতিহাসের এ সত্যতা হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করতে হবে। ‘জয় বাংলা’ শুধুমাত্র একটি স্লোগান নয়। অন্যায়-অবিচার-জুলুম-নির্যাতনকে পদদলিত করে বীর বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতা অর্জনের একটি সাহসী উচ্চারণ ‘জয় বাংলা’ ‘জয় বঙ্গবন্ধু’।’

ভাস্কর্য নির্মাণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে কথা তুলে তিনি বলেন, অনেকদিন ধরে বিভিন্ন মহলের দাবি ছিল ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ভাস্কর্য নির্মাণ করা। সাবেক কিছু শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় আজ এ ফিগারেটিভ ভাস্কর্য বাঙালির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায়  তরুণ প্রজন্মের স্বদেশপ্রেমে সাহস ও শক্তি যোগাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২০ লাখ টাকা খরচে ছয় মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে ভাস্কর্যটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এর প্রতিকৃতি ঠিক করেন সোহরাব জাহান।

অন্য সহযোগীরা হলেন, মুজাহিদুর রহমান মূসা ও জয়াশীষ আচার্য। এর সমন্বয়ক কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. আলী আজগর চৌধুরী ও চারুকলা ইনিস্টিটিউটের পরিচালক শায়লা শারমিন সুইটি।

ভাস্কর্যের দুইটি স্তরের মধ্যে উপরের অংশে সরাসরি তিনজন মুক্তিযোদ্ধার অবয়ব। যার মধ্যে দুইজন পুরুষ ও একজন নারী।  এর মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে নারী ও পুরুষের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ তুলে ধরা হয়েছে।

নিচের অংশে দুইজন পাহাড়ি বাঙালির অবয়ব দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি বাঙালিদের অংশগ্রহণও তুলে ধরা হয়েছে। রয়েছে বর্তমান প্রজম্মের শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করার বহিঃপ্রকাশ।

ভাস্কর্যটির উচ্চতা বেদী থেকে প্রায় ১৮ ফুট ও  প্রস্থ প্রায় ২০ ফুট। এর মধ্যে উপরের স্তরে দুই মুক্তিযোদ্ধার উচ্চতা ১১ ফুট এবং নিচের স্তরে প্রতিটি মানব অবয়বের উচ্চতা লাইফ সাইজ ফুট।

ভাস্কর্য নির্মাণের বিষয়ে নির্মাতা সোহরাব জাহান বার্তা২৪.কমকে বলেন, দেশ-বিদেশে অনেক কাজ করলেও কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য নির্মাণ এটাই আমার প্রথম কাজ। ভাস্কর্যটির নিচের অংশ নির্মাণের ক্ষেত্রে লাইফ কাস্টিং মেথড অনুসরণ করা হয়েছে। আর উপরের অংশ সমসাময়িক মাধ্যম ও মেথড অনুসরণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের অন্যান্য ভাস্কর্যের চেয়ে এটির আলাদা বৈশিষ্ট্য কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্মিত অন্যান্য ভাস্কর্যে মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অংশগ্রহণ পরোক্ষভাবে বুঝানো হয়েছে। তবে এই ভাস্কর্যে মুক্তিযুদ্ধে নারীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

ভাস্কর্যটি উদ্বোধনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদসমূহের ডিন, রেজিস্ট্রার, প্রভোস্ট, বিভাগীয় সভাপতি, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর