রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদালয়ের (বেরোবি) এক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় রিফাত হোসেন আলিফ (২২) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাই হওয়া দুটি মোবাইল, টাকা ও ছিনতাইয়ের সময় ব্যবহৃত চাপাতি।
শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপকমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন।
তিনি জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় হামলার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়েরের পরপরই অভিযানে নামে পুলিশ। এরপর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রিফাত হোসেন আলিফকে নগরীর বাবুপাড়া বিস্কুট মোড় থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে এবং তার দেখিয়ে দেওয়া স্থান থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ, টাকা ও চাপাতি উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় তার সঙ্গে আরও দুজন ছিনতাইকারী অংশগ্রহণ করেছিল। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।
মূলত নেশার টাকার জন্যই মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নিয়ে ওই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম করে ছিনতাইকারীরা। গ্রেফতার আলিফ ও তার দুই সহযোগী চুরি ছিনতাই করে জীবন চালায়। এরা নিয়মিত নেশা করে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে এরা চুরি ও ছিনতাই করে। ঘটনার দিন তিনজনই ছিনতাইয়ের জন্য ঘোরাঘুরি করতে থাকে বলে জানান উপকমিশনার (অপরাধ) মো. আবু মারুফ হোসেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ছিনতাইকারীদের পৃথক হামলায় আহত হন জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্ট্যাজিজ বিভাগের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী পরাগ মাহমুদ ও ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মনিরুজ্জামান মজনু।
রাত আড়াইটার সময় শিক্ষার্থী পরাগ মাহমুদ পার্কের মোড় পার্কভিউ ছাত্রাবাস থেকে সর্দারপাড়ায় তার বন্ধুর ছাত্রাবাসে যাচ্ছিলেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেটের পূর্ব পাশে মডার্ন মোড়ে তিনি ছিনতাইকারীদের হামলার শিকার হন। তার ডান হাতে কুপিয়ে মোবাইল কেড়ে নিয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। প্রক্টরের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় রাতেই তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে শুক্রবার দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিক্ষার্থী পরাগ মাহমুদকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
একই দিন ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মনিরুজ্জামান মজনু লালবাগে ছিনতাইকারীদের হামলার শিকার হয়। এসময় তাকে ছুরিকাঘাত করে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সৈয়দ আনোয়ারুল আজিম বাদী হয়ে তাজহাট থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।