কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) একাডেমিক ভবনগুলোর আশেপাশে ময়লার ভাগাড় এবং শিক্ষার্থীদের কয়েকটি আবাসিক হলেও নেই যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।
কুবিতে একটি ছাত্রী হল ও ছাত্রদের তিনটি হল সহ শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে মোট চারটি হল। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের মাঝ বরাবর ফাঁকা চত্বরে ময়লার স্তুপ জমে আছে। শহীদ ধীরেন্দ্রনাথদত্ত হল ও কাজী নজরুল হলের রুমগুলোর সামনে শিক্ষার্থীদের জন্য নেই ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা। ফলে যত্রতত্র ময়লা জমে আছে হলগুলোতে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মামুন খান অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতিটি তলায় পর্যাপ্ত ময়লা ফেলার ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের সদিচ্ছার অভাবে যেখানে সেখানে ময়লা জমে রয়েছে। এ নিয়ে হল প্রশাসন থেকে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি।’
এদিকে একাডেমিক ভবনগুলো ঘুরেও একই চিত্র দেখা যায়। ভবনগুলোর মাঝের ফাঁকা চত্বরে, ভবনের পিছনে ময়লার ভাগাড় হয়ে আছে। সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের পেছনে বিভিন্ন স্থানে, সামাজিক বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানঅনুষদের সংযোগ সেতুর নিচে ,ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের সামনের ফাঁকা স্থানেও প্রচুর পরিমাণ বর্জ্য জমা হয়ে আছে।
প্রতিটি বিভাগের সামনে ডাস্টবিন থাকার পরও এই ময়লা কিভাবে জমা হয় জানতে চাইলে অনুষদগুলোর ডিন অফিস সূত্রে জানা যায়, বিভাগগুলোই মূলত বিভিন্ন সময় আয়োজন করা অনুষ্ঠানের অবশিষ্টাংশ, অফিসের অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ভবনের পেছনে ফেলে দিয়ে থাকে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ভবনের সামনের জায়গাসমূহ পরিষ্কার করলেও পেছনের গুলো পরিষ্কারের আগ্রহ বোধ করে না। পরিষ্কার করলেও ততদিনে দুর্গন্ধ ও মশার উপদ্রবে শিক্ষার্থীরা নাজেহাল হয়ে যায়।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্যের সভাপতি সাজ্জাদ বাসার বলেন, ‘আমরা বারবার কুবিপ্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি যাতে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গার পাশে ডাস্টবিন বসানো হয়। কিন্তু এটা প্রশাসন বাস্তবায়ন করেনি। আর বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, কিন্তু সেগুলো বসানোর কিছুদিন পরেই আর খুঁজে পাওয়া যায় না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা কাজে নিয়োজিত এস্টেট শাখার সাথে এ বিষয়ে কথা বললে কর্মরত ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. মিজানুর রহমান জানান, ‘সরাসরি আমরা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গন পরিষ্কার রাখার কাজ করি। অনুষদগুলোর ক্ষেত্রে ডিন এবং হলগুলোর ক্ষেত্রে প্রভোস্ট ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মাধ্যমে লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। লোকবল বেশি প্রয়োজন হলে আমরা সেভাবেই তাদের যোগান দেই।’
পরিচ্ছন্নতার এই বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রভোস্ট ড. মো. জুলহাস মিয়া বলেন, ‘বিষয়গুলো আমি দেখছি কিভাবে সমাধান করা যায়। সংশ্লিষ্টদের সাথে বসে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করবো।’
সার্বিক বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘এ বিষয়গুলো দ্রুতই আমি সংশ্লিষ্ট ডিন ও প্রভোস্টদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিব।’