করোনার দীর্ঘ ছুটির পর গত পহেলা অক্টাবর আবাসিক হল খুলেছে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি)। হলের ডাইনিং এবং ক্যান্টিনের খাবারের দাম ১০-১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও খাবারের মান বাড়েনি। উচ্চমূল্যে নিম্নমানের খাবারে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ডাইনিং-ক্যান্টিনের খাবারের দাম পূর্বের তুলনায় বাড়ানো হয়ছে। মুরগী-ভাত ৪০ টাকা, মাছ-ভাত ৩৫-৪০ টাকা, মুরগী-খিচুড়ি ৫৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে যা পূর্বের চেয়ে ৫ টাকা করে বেশি। নবাব সিরাজউদ্দৌলা হলের ক্যান্টিনে শুধু ভাত পূর্বে ১০ টাকা থাকলেও এখন ১৫ টাকা। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে শুক্রবারে পূর্বে পোলাও ৫০ টাকায় পাওয়া যেত যা এখন ৬৫ টাকা করা হয়ছে।
আগে ৫ টাকার ভাত পাওয়া গেলেও এখন তা ১০ টাকা। শুক্রবার বিভিন হলের ক্যাটিনে ফিস্টের (বিশেষ খাবার) নামে ৮০-১০০ টাকা করে নেওয়া হয় এবং বিকল্প কোন খাবারর ব্যবস্থা করা হয়না। একবেলা ৮০-১০০ টাকায় খাওয়া অনেকের সামর্থ্যের বাহিরে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি মার্কেট ও সেকেন্ড গেট সংলগ্ন হোটেলগুলোতে খাবারের দাম প্রায় ২০ শতাংশ বাড়ানা হয়ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট মূল্য তালিকা করে দেয়না বলেই এমন স্বেচ্ছাচারিতা করে হোটেল পরিচালকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শেরেবাংলা হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ডাইনিংয়ে পূর্বে দুপুর ২৫ এবং রাত ২০ টাকা ছিল এখন তা প্রতিবলা ৩০ টাকা। এছাড়া ফিস্টের নামে প্রহসন শুরু করছে ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষ। ৮০-১০০ টাকায় ১ বেলা খাওয়া অনকসময় সম্ভব হয়না। সেক্ষেত্রে বিকল্প খাবারের ব্যবস্থা রাখার দাবি জানাচ্ছি।’
নবাব সিরাজউদ্দৌলা হলের শিক্ষার্থী মো. মারুফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে খাবারের মান উন্নয়ন বাদ দিয়ে দাম বাড়ানোর প্রতিযাগিতা শুরু হয়েছে। তরকারিতে প্রায়ই পচা আলু পাওয়া যায়, মাংসের সাইজ ছোট করা হয়ছে। শেষবেলায় সস্তায় তরকারি কিনে আমাদের খাওয়ায়।’
কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, ‘খুবই নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয়, নিম্নমানের তেল দিয়ে রান্না করায় তরকারি মুখে দিলে গলা জ্বলে, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়। প্রতিকজি চালের দাম ৫-৬ টাকা বাড়লেও আমাদের থেকে প্রতিপ্লেটে ৫ টাকা করে বেশি নিচ্ছে।’
বিভিন্ন হলের ডাইনিং ও ক্যান্টিন পরিচালকরা জানান, সবকিছুর দাম বাড়ছে তাই বাধ্য হয়েই খাবারের দাম বাড়াতে হয়ছে। কোন বরাদ্দ বা ভর্তুকী না থাকায় শিক্ষার্থীদর টাকা দিয়েই তাদের খাওয়াতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জিনিসপত্রের মূল্য বদ্ধির কারণে খাবারের দাম কিছুটা বদ্ধি করা হয়েছে। আমাদর শীঘ্রই প্রভোস্ট কাউন্সিলের মিটিং হবে। তারপর আমরা সব হলের ডাইনিং ক্যান্টিনে সমন্বয় করে খাবারর দাম নির্ধারণ করে দিব। খাবারের মান বজায় রাখার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
ডাইনিংয়ে ভর্তুকী দেওয়া হয়না কেন এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি বলেন, ‘ভর্তুকী হিসবে ডাইনিংয়ের কর্মচারীদের বেতন, গ্যাস বিল, থালাবাসন দেওয়া হয়।’