খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। শিক্ষকের মৃত্যুতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধসহ ৫ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষক সমিতি।
বৃহস্পতিবার (০২ ডিসেম্বর) দুপুরে কুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষক সমিতির সকল সদস্যবৃন্দ অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করে।
প্রতিবাদ সমাবেশে অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত ও বিচারের দাবি করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, অনতিবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা না পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন। শিক্ষক সমিতি কর্তৃক গৃহীত যে কোনও ধরনের কর্মসূচির সময় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের পাশাপাশি প্রশাসনিক কার্যক্রমও বর্জন করবেন। নিহত ড. মো. সেলিম হোসেনের পরিবারকে প্রচলিত বিধি অনুযায়ী প্রাপ্য ন্যায্য অর্থনৈতিক সুবিধাসহ অতিরিক্ত ১ কোটি টাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস- চ্যান্সেলর, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। বিচারিক প্রক্রিয়া অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু করতে হবে। ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, গত ৩০ নভেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুরে কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন মারা যান। তিনি লালন শাহ ছাত্র হলের প্রভোস্ট ছিলেন। চিকিৎসকরা জানান, হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু মৃত্যুর আগে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছিলেন ওই শিক্ষক। লালন শাহ ছাত্রহলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ ওঠে ছাত্র সংগঠনের কিছু শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। তারা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেনকে নিয়মিত হুমকি দিত তাদের মনোনীত প্রার্থীকে নির্বাচিত করার জন্য।
কুয়েট ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আসলাম পারভেজ বা অন্য কেউ আমার নিকট আসেনি। ঘটনার পরদিন (১ ডিসেম্বর) সকালে শিক্ষক সমিতির বৈঠক চলাকালীন সময়ে আমার প্রেসার বেড়ে যাওয়ায় আমি বাসায় অবস্থান করছিলাম, আমি কোথাও পালিয়ে যাইনি। আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নিহত শিক্ষক সেলিম হোসেনের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে পরিবারের পক্ষ থেকে ময়নাতদন্ত ও মামলা করতে রাজি হয়নি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।