কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যু: বাড়লো ক্যাম্পাস বন্ধের সময়সীমা

, ক্যাম্পাস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা | 2023-09-01 06:20:19

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) আগামী ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

রোববার (১২ ডিসেম্বর) রাতে অনলাইনে কুয়েটের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কুয়েটের জনসংযোগ ও তথ্য শাখার মুখপাত্র রবিউল ইসলাম সোহাগ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে প্রথম দফায় গত ৩ ডিসেম্বর ১০ দিনের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়ে‌ছিলো।

কুয়েট কর্তৃপক্ষ জানায়, অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে গত ৩ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভায় কুয়েট ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা এবং ওই দিন বিকাল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া ওই দিন ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়। কিন্তু তদন্ত কমিটি এখনও তদন্ত সম্পন্ন করতে পারেনি। তদন্ত কমিটির সুপারিশ বিবেচনায় নিয়ে ক্যাম্পাস বন্ধের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেন (৩৮)। সম্প্রতি কুয়েটের লালনশাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য-ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচন নিয়ে ফজলুল হক হলের বর্ডার কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান তার অনুগতদের ডাইনিং ম্যানেজার নির্বাচিত করার জন্য ড. সেলিমকে চাপ দেন।

ঘটনার দিন দাফতরিক কক্ষে অশালীন আচরণ ও মানসিক নির্যাতনেরও শিকার হন তিনি বলে অভিযোগ উঠেছে। ৩০ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন ছাত্ররা ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে ড. সেলিম হোসেনকে জেরা শুরু করেন। পরে তারা শিক্ষককে অনুসরণ করে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করে।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা আনুমানিক আধা ঘণ্টা ওই শিক্ষকের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। পরে শিক্ষক ড. সেলিম হোসেন দুপুরে খাবারের জন্য ক্যাম্পাসের কাছে বাসায় যাওয়ার পর ২টায় তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন, তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে কিছু সাধারণ ছাত্রের জেরা, অপমান, অবরুদ্ধ করে রাখা ও মানসিক নির্যাতনে তার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুই দফা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শিক্ষক সেলিমের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে দোষীদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার (০২ ডিসেম্বর) দুপুরে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান শিক্ষকরা।

এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েট বন্ধসহ শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার পর সাতটি আবাসিক হলে থাকা প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী হল ছাড়েন। ইতোমধ্যে প্রাথমিক সত্যতা মেলায় সেজানসহ ৯ ছাত্রকে কুয়েট থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর