কুবির রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

, ক্যাম্পাস

কুবি করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,কুমিল্লা | 2023-08-24 22:14:22

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) অধিকতর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়নের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে কোষাধ্যক্ষের স্বাক্ষরের পরিবর্তে রেজিস্টার অধ্যাপক ড. আবু তাহের নিজেই স্বাক্ষর করেন। একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির জন্যই রেজিস্টার তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেআইনীভাবে নিজেই এ চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে স্বাক্ষর করেন বলে অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি সূত্র। 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেডকোয়ার্টারে সেনাবাহিনীর পক্ষে গত বছরের ১১ মার্চ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আলী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে স্বাক্ষর করেন রেজিস্ট্রার ড. মো. আবু তাহের।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-২০০৬ এর ১২ (২) অনুচ্ছেদে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অর্থ সংক্রান্ত সকল চুক্তিতে স্বাক্ষর করিবেন।’ অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী এ চুক্তিতে স্বাক্ষরের নিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামানের। দুর্নীতি করার সুবিধা করতেই নাকি কোষাধ্যক্ষকে এই প্রকল্পের বাইরে রেখে রেজিস্টার অধ্যাপক ড. আবু তাহের নিজেই  আইনবহির্ভূতভাবে এ স্বাক্ষর করেন এমন অভিযোগ সংশ্লিষ্ট অনেকের।

এদিকে এ নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা জানান, প্রায় এক হাজার সাত’শ কোটি টাকার এই একটি প্রকল্পকে ঘিরে উপাচার্য ড. এমরান কবির চৌধুরী ও রেজিস্ট্রার ড. মো. আবু তাহের দুর্নীতির সুবিধার্থে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কাজে নিজের গ্রুপের ঘনিষ্ঠ লোকজনকে যুক্ত করেছেন। এর অংশ হিসেবেই সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে বেআইনীভাবে স্বাক্ষর করেন রেজিস্ট্রার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি উপাচার্য মহোদয়কে অবহিত করেছি তখন। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময় পরে স্যার আমাকে আর কিছুই জানায়নি। তখন আমাকে শুধু এটুকুই জানানো হয়েছে যে, সেনাবাহিনীর সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। কিন্তু কাকে দিয়ে স্বাক্ষর করা হবে আমাকে জানানো হয়নি। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে সুস্পষ্টভাবে লেখা আছে অর্থ সংশ্লিষ্ট সকল চুক্তি স্বাক্ষর করবেন কোষাধ্যক্ষের। এর ব্যত্যয় কেন হল এটা একটা রহস্য। এসবের পিছনে কার কি উদ্দেশ্য ছিল তা আমি বলতে পারছি না। তবে এটা সুনির্দিষ্টভাবে আইন পরিপন্থী কাজ।’

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘ভিসি স্যারের আদেশক্রমেই আমি স্বাক্ষর করেছি।’ তার দাবি এটা একটা কাজের চুক্তি। কোনও অর্থনৈতিক চুক্তি নয়। 

এদিকে রেজিস্টারের এ বক্তব্যের সাথে ড. মো. আসাদুজ্জামান দ্বিমত পোষণ করে বলেন, ‘কাজটা তো হবে অর্থের মাধ্যমে। যে কাজে টাকার সম্পৃক্ততা থাকবে সেটাই তো আর্থিক চুক্তি। তাহলে তারা কীভাবে বলে এটা আর্থিক চুক্তি না। এগুলো অযৌক্তিক কথাবার্তা।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী এ নিয়ে বলেন, ‘আইন মেনেই স্বাক্ষর করা হয়েছে। রেজিস্ট্রারের করার কথা তিনিই স্বাক্ষর করেছেন।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর