অবশেষে প্রিয় শিক্ষক ড. জাফর ইকবালের আশ্বাসে অনশন ভাঙছে শাবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। কোনো শর্তে নয়, বরং শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় তারা অনশন ভাঙছেন বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
ড. জাফর ইকবাল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান। তিনি শিক্ষকতা জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) ভোররাতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন ড. জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ড. ইয়াসমিন হক। প্রায় দেড় ঘন্টা শিক্ষার্থীদের কথা কথা শুনেন দুজন। এরপর অনশন ভাঙতে বললে শিক্ষার্থীরা এতে সম্মতি দেন। এসময় তারা জানায় বাকিরা সকাল ৮টায় হাসপাতাল থেকে আসার কথা রয়েছে। তারা এলে এক সাথে সবাই অনশন ভাঙবে।
এর আগে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) রাত পৌনে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে সোজা অনশনকারী শিক্ষার্থীদের কাছে চলে যান।
এ সময় অনশনরতদের চিকিৎসা সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার কথা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, ‘আমি আশ্বস্ত হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম চিকিৎসা সহায়তা থাকলে বাচ্চারা অন্তত কিছুটা শক্ত থাকবে। কিন্তু এসে দেখলাম ভিন্ন। এটা অমানবিক।’
আন্দোলনকারীদের খাবার সহায়তার জন্য অর্থ দেওয়ায় সাবেক পাঁচ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করায় তিনি ক্ষুব্ধ বলে জানান। পরে নগদ ১০হাজার টাকা শিক্ষার্থীদের হাতে দিয়ে বলেন, ‘আমি টাকা দিলাম। তাহলে আমাকেও গ্রেফতার করা হোক।’
তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘সরকার থেকে আমাকে কথা দেওয়া হয়েছে সকল মামলা প্রত্যাহার করা হবে এবং কাউকেই হয়রানি করা হবে না।’
সাবেক শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে বিধিনিষেধ থাকায় নিয়ম অনুযায়ী তাকেও গ্রেফতার করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আমি কারো অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করিনি। তাই আমাকেও গ্রেফতার করা হোক।’
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে হলের ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। রোববার ছাত্রীরা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে ভিসিকে মুক্ত করে। এতে অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি উঠে।