জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ফারজানা ইসলামের মেয়াদ শেষ হয়েছে ১ মার্চ। কিন্তু নিয়ম ভেঙে অবৈধভাবে অফিস করেছেন পরের দিন দুপুর পর্যন্ত। এ সময় তিনি অফিসিয়াল বৈঠকও করেছেন। উপাচার্যের অফিসের হাজারখানেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল এখনো তার বাসায় আগলে রেখেছেন। পুরোনো সিন্ডিকেটে এখনো চলছে বিভিন্ন পদে নিয়োগের তোড়জোড়।
প্রধানমন্ত্রী ১২ মার্চ দেশে ফিরে তাকে আবারও দায়িত্ব দেবেন বলে শিক্ষকদের সঙ্গে কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করছেন তিনি। তাকে (ফারজানা) প্রধানমন্ত্রী আবারও দায়িত্ব দেবেন বলে চোখ রাঙাচ্ছেন। অপরদিকে উন্নয়ন প্রকল্পের ৬৫০ কোটি টাকার ওয়ার্ক ওয়ার্ডার আনতে উপর মহলে ‘ব্যাগ’ নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করার গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে। প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার নাসির উদ্দিন বলেন, ওয়ার্ক অর্ডারের কাজ প্রক্রিয়াধীন। দু-একটি এসেছে, বাকিগুলোর প্রক্রিয়া চলমান। ফলে উপাচার্যের পদ নিয়ে ফারজানা ইসলাম ধূম্রজাল বুনেছেন।
অন্যদিকে ফারজানা ইসলাম ভিসি পদ থেকে বিদায় নেওয়ার পরে শিক্ষার্থীরা কাঁঠাল, ঝাড়ু নিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে। অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী তাকে আর এ পদে ক্যাম্পাসে দেখতে চান না বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এমনকি তার ঘনিষ্ঠ ও আস্থাভাজন আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা ফারজানা আবার দায়িত্বে এলে তার সঙ্গে থাকবেন না বলে মন্তব্য করেছেন।
রেজিস্ট্রার দপ্তর, হিসাব বিভাগ, উন্নয়ন প্রকল্পের দপ্তর, ইঞ্জিনিয়ার দপ্তরসহ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের পুরোনো হাজারখানেক ফাইল এখনো ফারজানা ইসলাম কুক্ষিগত করে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-উপাচার্যকেও অভিহিত করা হয়নি। এ বিষয়ে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, আমি এখন পর্যন্ত নিয়মিত ফাইলেই স্বাক্ষর করছি। আগের ফাইল সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। অন্যদিকে ফারজানা ইসলাম যথাসময়ে স্বাক্ষর না করায় থমকে গেছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইলের কাজ।
হিসাব বিভাগের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, আমাদের অফিসের ২০টির অধিক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল এখনো ফারজানা ইসলামের কাছে রয়েছে। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরের জুন ক্লোজিংয়ের ফাইলও রয়েছে। গত বছরের জুনে আবেদন করা ৩ ব্যক্তির পেনশনের ফাইলও রয়েছে, যা এখন পর্যন্ত তিনি ছাড়েননি।
এছাড়া পদোন্নতির জন্য সিন্ডিকেটে আদেশ হলেও সংশ্লিষ্ট নথি সাবেক এই উপাচার্যের বাসভবনে থাকায় পদোন্নতিপ্রাপ্তরা যোগদান করতে পারছে না বলেও জানান তিনি। উপাচার্যের দায়িত্ব শেষ হলেও আপাতত বাসা ছাড়ছেন না বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে এস্টেট অফিসকে কিছুই অবহিত করা হয়নি বলে জানিয়েছেন এ অফিসের প্রধান আব্দুর রহমান বাবুল।