প্রতিষ্ঠার পনেরো বছরেও শিক্ষার্থীদের হাতে উন্নতমানের আইডি কার্ড বা স্মার্ট আইডি কার্ড তুলে দিতে পারেনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রশাসন। কাগজের আইডি কার্ড দেখানোয় অনেক ক্ষেত্রে হয়রানিতে পড়তে হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কাগজের আইডি কার্ড সহজে নষ্ট হয়ে যায়। সংরক্ষন করা খুবই কষ্টসাধ্য। এছাড়া তারা কার্ড বাবদ ১০০ টাকা প্রদান করে প্রশাসনকে। এই টাকায় আরও উন্নতমানের কার্ড তৈরি করা সম্ভব বলে জানায় তারা। এছাড়াও বাইরে আইডি কার্ড দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে তারা একে ভুয়া আইডি কার্ড উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করে এমন অভিযোগও পাওয়া যায়।
বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইসমাইল রহমান তার এমনই এক অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেন ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে একটি গ্রুপে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘ক্যান্টনমেন্টের গেইটে মাঝেমধ্যেই কিছু স্ট্রিক্ট মাইন্ডের ডিফেন্স সদস্য ডিউটিতে পড়ে। … এক সদস্য ভাই ডাক দিলো আমাকে। পরিচয় জানতে চাইলো, বললাম। আইডি কার্ড দেখতে চাইলো,দেখালাম। সব ঠিকাছে। উনি কোনোভাবেই মানতে নারাজ যে এইটা ভার্সিটির আইডি কার্ড! উনি বলতে নাকি বাধ্য হচ্ছেন যে এইটা আমি কোথাও থেকে বানিয়েছি। কারণ কোনো ভার্সিটির আইডি কার্ড এমন হতে পারেনা, উনার মতে।’
তার এই পোষ্টের মন্তব্য অংশে আরও অনেকেই তাদের সাথে ঘটা একই ধরনের ঘটনা ব্যক্ত করেন। উন্নতমানের আইডি কার্ড পাওয়ার আশ্বাস পাওয়ার আশ্বাস দেয়ার পরও এখনও কেন তা বাস্তবায়ন হয়নি সে বিষয়ে প্রশাসনের দায়িত্ববোধ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।
এ ব্যাপারে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ সময় পার হলেও শিক্ষার্থীরা স্মার্ট আইডি কার্ড পায়নি। নিম্ন মানের আইডি কার্ডটি কয়েকবছর সংরক্ষণ করা শিক্ষার্থীদের পক্ষে কষ্টকর হয়ে পড়েছে। অনেক স্কুল-কলেজে বর্তমানে উন্নতমানের স্মার্ট আইডি কার্ড প্রদান করা হয় সেখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় এমন নিম্নমানের কার্ড মানানসই নয়।
এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এ বছরও শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র তৈরির জন্য কমিটি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো: আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ৭ সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব হিসেবে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান ও জনসংযোগ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ এমদাদুল হক সহ প্রক্টর ও হলগুলোর প্রভোস্টরা।
শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র তৈরি কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা পূর্বের পরিচয়পত্রগুলোর নমুনা দেখবো। তারপর শিক্ষার্থীদের জন্য যেটা সবচেয়ে বেশি ভালো হয় সেটা নির্ধারণ করবো।