তপ্ত ক্যাম্পাসে রঙ ছড়াচ্ছে রক্তিম কৃষ্ণচূড়া

বিবিধ, ক্যাম্পাস

আছিয়া খাতুন, রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী | 2023-08-31 12:11:21

বসন্তকে ঋতুরাজ বলা হলেও অনেকের চোখে গ্রীষ্ম হচ্ছে পুষ্প উৎসবের ঋতু। এই গ্রীষ্মের ফুল হিসেবে রাধাচূড়া, সোনালু বা জারুল ফুলের সৌন্দর্যও কম নয়। তবে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম উদ্ভাসের কাছে যেন ফিকে হয়ে যায় অন্য সব ফুলের রং। কৃষ্ণচূড়ার তাৎপর্য বুঝাতে তাইতো রবি ঠাকুর গেয়েছেন, ‘গন্ধে উদাস হাওয়ার মতো উরে তোমার উত্তরী কর্ণে, তেমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জুরী।’

তপ্ত গ্রীষ্মে প্রকৃতি যখন প্রখর রৌদ্রে পুড়তে শুরু করে, কৃষ্ণচূড়া তখন জানিয়ে দেয় তার আগমন বার্তা। ঠিক তেমনিভাবে গ্রীষ্মের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসের ভাঁজে ভাঁজে এখন ডানা মেলেছে রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া।

রাবি ক্যাম্পাসের ভাঁজে ভাঁজে এখন ডানা মেলেছে রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া।

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিমপাড়া এলাকায় তাপসী রাবেয়া হল, রোকেয়া হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হল, সত্যেন্দ্রনাথ বসু একাডেমিক ভবনসহ বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের সামনে এবং স্টেশন বাজারে রঙ ছড়াচ্ছে ফুটন্ত লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়া।

গ্রীষ্মের তাপদাহে চারদিকে কাঠফাটা রোদ্দুর, মাঝে মধ্যে দমকা হাওয়ায় দোল খাচ্ছে নজর করা এসব ফুল। যা চলতি পথে হঠাৎ করে পথিকের চোখে এনে দিচ্ছে শিল্পের দ্যোতনা। মন ছুঁয়ে রঙিন দৃষ্টিতে অবাক হয়ে সে সৌন্দর্য উপভোগ করছে সবাই। এমনই নয়নাভিরাম কৃষ্ণচূড়া ফুলের মায়ায় জড়িয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ক্যাম্পাস।

গ্রীষ্মের শুরুতেই এই বিশাল ক্যাম্পাস যেন লাল রঙে ছেয়ে গেছে। যা দেখে মনে হচ্ছে এ যেন কৃষ্ণচূড়ার এক বৃহৎ আড্ডা স্থল। সূর্যের সবটুকু উত্তাপ কেড়ে নিয়েছে টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়া। প্রখর রোদে পুড়ে জানান দিচ্ছে তার সৌন্দর্যের বার্তা। প্রকৃতিতে নীল আকাশের ক্যানভাসে জ্বলছে গাঢ় রক্তিম রঙ, এ যেন লাল রঙের এক মায়াবী ক্যানভাস।

কৃষ্ণচূড়াকে আমরা মূলত লাল রঙে দেখতেই অভ্যস্ত হলেও উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া তিন রঙের হয়ে থাকে। লাল, হলুদ ও সাদা। এটি একটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ যার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া (Delonix regia)। ফ্যাবেসি (Fabaceae) পরিবারের অন্তর্গত এই বৃক্ষটি গুলমোহর নামেও পরিচিত। কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় কম (সর্বোচ্চ ১২ মিটার) হলেও শাখা-পল্লবে এটি বেশি অঞ্চল ব্যাপী ছড়ায়। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। যা প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মত লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট। ভারতবর্ষে এপ্রিল-জুন সময়কালে কৃষ্ণচূড়া ফুল ফুটলেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কৃষ্ণচূড়ার ফুল ফোটার সময় ভিন্ন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর