করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষাকার্যক্রম। গেল বছরের ৫ অক্টোবর খুলে বিশ্ববিদ্যালয়। এ সময় বন্ধ ছিল শিক্ষার্থীদের বহনকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ও আবাসিক হল। বন্ধ থাকাকালীন শিক্ষার্থীরা পরিবহন সেবা ও আবাসন সুবিধা না নেওয়ার পরেও এসবের ফি দিতে বাধ্য করা হয় শিক্ষার্থীদের।
মওকুফের ঘোষণা দিয়ে কর্তৃপক্ষ ১ জুলাই বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে। এতো কিছুর পরও বিভাগ ও ইন্সটিটিউটগুলো আবাসান ও পরিবহন ফি আদায় করছে।
জানা যায়, পরিবহন ফি ১০৮০ টাকা নেওয়ার পাশাপাশি হল ভেদে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত আবাসন ফি নেওয়া হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরিচালক দফতর সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীপ্রতি পরিবহন ফি ১ হাজার ৮০ টাকা এবং আবাসন ফি হলভেদে ৩০০-৬০০ টাকা। এসব ফি আদায় হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় দাঁড়াত ৪ কোটি ২৪ লাখ ৪৪ হাজার ৮৮ টাকা। যার মধ্যে পরিবহন ফি ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা এবং সিট ভাড়া ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৮৮ টাকা। উপাচার্যের নির্দেশে এ অর্থ মওকুফ করা হয়। যারা ফি পরিশোধ করেছেন, পরেরবার ভর্তির সময় তাদের এ টাকা সমন্বয় করা হবে বলে জানিয়েছিল হিসাব পরিচালক দফতর।
নানা জটিলতার কারণে এ টাকা সমন্বয় করতে বিলম্ব হচ্ছে বলে স্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিভাগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে এ টাকা পোঁছে দেওয়া হবে। এই সংক্রান্ত একটি ফাইল উপাচার্যের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বরখেলাপ বলে আমরা মনে করি। এটি যদি সমন্বয় না করা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় যদি পুনর্বিবেচনা না করে, সেক্ষেত্রে আমরা নতুন করে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে প্রশাসনকে বিবেচনা করতে বাধ্য করবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, সব মিলিয়ে ১৯ হাজার শিক্ষার্থী এ টাকা পাবেন। কেউ অফলাইনে টাকা জমা দিয়েছেন, কেউবা অনলাইনে জমা দিয়েছেন। আবার কারো রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই। একটা একটা করে খুঁজে বের করতে হচ্ছে। সব মিলে বেশ কিছু জটিলতা থাকায় বিলম্ব হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা এ টাকা বিভাগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দিয়ে দেব। শিক্ষার্থীরা টাকা ফেরত পাবে এটা নিশ্চিত।
এবিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কিছু জটিলতা থাকায় বিলম্ব হচ্ছে বলে হিসাব পরিচালকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আমি আবারও এর অগ্রগতির বিষয়ে খোঁজ নেব। খুব দ্রুত এসব সমন্বয় করা হবে, বলে জানান উপাচার্য।