সিট দখলকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
রোববার (০৫ জুন) রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টা হল ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর শিকদার ও সাধারণ সম্পাদক মিশাত সরকারের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। পরে তানভীর শিকদার ও মিশাত সরকারের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
জানা যায়, হলের পূর্ব অংশের দোতলার ২২ নম্বর কক্ষের সামনে গিয়ে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে একপক্ষ আরেক পক্ষকে ধাওয়া দেয়। এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি শুরু হয়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ২০২০ সালের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কৃত হন ছাত্রলীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ রানা (২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ)। বহিষ্কৃত হলেও হল সংসদের ভিপি এমএম কামাল উদ্দিনের সঙ্গে সুসম্পর্কের সুবাদে অবৈধভাবে হলের ২২ নম্বর কক্ষে থাকতেন। কিন্তু কিছুদিন আগে মাসুদ রানা হল ছেড়ে দিলে, সেখানে হল ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর শিকদার এক শিক্ষার্থীকে তুলে দেন। এতে সাধারণ সম্পাদক মিশাত সরকারের সঙ্গে শুরু হয় অন্তর্দ্বন্দ্ব।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতির অভিযোগে ২০২০ সালের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কৃত হন ছাত্রলীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ রানা (২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ)। বহিষ্কৃত হলেও হল সংসদের ভিপি এমএম কামাল উদ্দিনের সঙ্গে রাজনীতির সুবাদে মাসুদ রানা অবৈধভাবে হলের ২২ নম্বর কক্ষে থাকতেন। মাঝে করোনার দীর্ঘ বন্ধের পর বিশ্ববিদ্যালয় খুললে আবারও তিনি হলে থাকা শুরু করেন।
সম্প্রতি মাসুদ রানা হল ছেড়ে দিলে সেখানে হল ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর শিকদার এক শিক্ষার্থীকে তোলেন। তবে সাধারণ সম্পাদক মিশাত সরকার ওই সিট তাদের দাবি করে সেখানে আরেক জনকে উঠাতে চান। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
এবিষয়ে তানভীর শিকদার বলেন, মাসুদ রানার বাড়ি জয়পুরহাট। তিনি হল ছেড়ে দেওয়ার পর গত এক সপ্তাহ ধরে ওই সিটে জয়পুরহাটের অন্য এক শিক্ষার্থী থাকছেন। হুট করে সেক্রেটারি গ্রুপের শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, এটা তাদের সিট। তারা ওই শিক্ষার্থীকে নামিয়ে দিয়ে আরেক জনকে উঠানোর চেষ্টা করেন। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক মিশাত সরকার বলেন, মাসুদ যে অঞ্চলের, সেই অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা আমার সঙ্গে রাজনীতি করে। মাসুদ রানা চলে যাওয়ার পর সিটটি আমাদের দিয়ে গেছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষরা জোর করে ওখানে আরেকজন উঠিয়ে দেয়। এটা নিয়ে জুনিয়রদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে।
দুই ঘণ্টা ধরে উত্তেজনা চললেও হল প্রশাসনের কাউকে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর রাত ১২টায় হলে আসেন জ্যেষ্ঠ আবাসিক শিক্ষক মো. বেলাল হোসেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টির সলিমুল্লাহ মুসলিম হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মজিবুর রহমান ছুটিতে থাকায় বেলাল হোসেন ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষের দায়িত্বে আছেন। তিনি বলেন, আমি হলে এসেছি। দুই গ্রুপের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করা হবে।