মাদরাসা থেকে বোর্ড বৃত্তির টাকা পাওয়ার জটিলতার সমাধান করে বৃত্তি পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি হওয়া মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। অবিলম্বে বৃত্তির টাকা পাওয়ার জটিলতার সমস্যা সমাধান না করলে হাইকোর্টে রিট করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন বৃত্তিপ্রাপ্তদের একাংশ।
বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মাদরাসা বোর্ড থেকে বৃত্তিপ্রাপ্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, কারিগরি ত্রুটি না বরং এখানে কারও সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। এ সদিচ্ছার অভাব কাদের! সহজেই যদি বলি মাউশিতে যারা আছে, মাদরাসা অধিদফতর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের— এই তিনটা এনটিটিকে আমরা দায়ী করছি। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। করোনাকালীন সময়ে যখন বিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটালাইজড করার কথা বলা হয়— আমরা সবাই যেন ক্রমিকের সঙ্গে মিল রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিং থেকে দেওয়া ফরমে পূরণ করি! আমরা খুশি হয়েছিলাম। কারণ, আগের মতো মেকানিকাল ওয়েতে আমাদের দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না। কিন্তু তারা দুই বছরে ভোগান্তি দূর না করে ভোগান্তি আরও বৃদ্ধি করেছে।
মানবন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী আফরাজ আল মাহমুদ বলেন, আমরা ইতিমধ্যে মাউশি, মাদরাসা অধিদফতর, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবার কাছেই গিয়েছি। কিন্তু আমরা আমাদের প্রাপ্য অধিকার তো পাচ্ছিই না, বরং লাল ফিতার দৌরাত্ম্যের শিকার হচ্ছি। অতি শিগগিরই বৃত্তির টাকা দিতে হবে।
লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল ওহাব বলেন, কলেজের শিক্ষার্থীরা বৃত্তির টাকা পেয়ে পড়াশোনা করছেন, কিন্তু মাদরাসা শিক্ষার্থীরা বৃত্তির টাকা পাচ্ছে না। এর মাধ্যমে তাদের মেধার অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আনাস ইবনে মুনিরের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন তামজিদ হোসাইন, আফরাজ আল মাহমুদসহ মাদ্রাসা বোর্ড থেকে বৃত্তিপ্রাপ্ত ঢাবির শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অনতিবিলম্বে ঢাবি শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা মাদরাসা বোর্ড থেকে বৃত্তি পেয়েছেন, তাদের সবাইকে অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এ বিষয়ে সদিচ্ছা না দেখায় এবং সমস্যার সমাধান না করে তাহলে হাইকোর্টে রিট করার ঘোষণা দেন তারা।
উল্লেখ্য, ২০১৭, ১৮, ১৯ ও ২০ সালে আলিম (উচ্চ মাধ্যমিক) পরীক্ষায় মেধার স্বাক্ষর রাখা বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পাচ্ছেন না। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর আলাদা হয়ে যাওয়ার পর থেকে এ সমস্যার শুরু। একইসময়ে বৃত্তি পাওয়া অন্যান্য বোর্ডের শিক্ষার্থীরা একাধিকবার বৃত্তি পেলেও ‘অদৃশ্য’ কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। ফলে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মাদরাসা শিক্ষার্থী বৃত্তির টাকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর, মাদরাসা বোর্ড ও মাউশিতে গেছেন, কিন্তু ফিরেছেন খালি হাতে।