জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিনের অপসারণের আদেশ বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করেন। তবে হাইকোর্ট এই অপসারণের আদেশ বাতিল ঘোষণা করলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ করে আপিল করার সুযোগ রয়েছে।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেন এই শিক্ষককে আর হয়রানি না করে। বিশ্ববিদ্যালয় আপিল না করলে দ্রুত তিনি ক্লাসে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, সাবেক উপাচার্যের পছন্দের ব্যক্তি না হওয়ায় নাসির উদ্দীন স্যারকে নানারকম হয়রানির স্বীকার হতে হয়েছে। অপসারণের ফলে গত ৫ বছর এই শিক্ষক মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এইসব বিষয় বিবেচনা করে বর্তমান প্রশাসন যেন আবারও কোন হয়রানিমূলক ব্যবস্থা না নেয়।
তাদের দাবি নাসির উদ্দীন ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় আপিল করলেও সত্যের জয়ই হবে। তবে নিশ্চিতভাবে তা এই শিক্ষকের ক্লাসে ফিরতে বিলম্বিত করবে।
ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম সজিব বলেন, সাবেক উপাচার্যের ষড়যন্ত্র শিকার একজন ভাল মানুষ পাঁচ বছর চাকরিচ্যুত ছিলো। হাইকোর্টের রায়ে তিনি তার সম্মান ফিরে পাচ্ছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ৫ বছরেও স্যারের প্রোফাইলটা সরানো হয় নাই। বিষয়টা প্রতীকী বটে।
আরেক শিক্ষার্থী হাদিউজ্জামান বলেন, সত্যের কখনো পরাজয় হয় না। সত্যের জয় হবেই। আজ মিথ্যা পরাজিত হলো। আমাদের সবার প্রিয় স্যার আজ থেকে আবারো নিজ ডিপার্টমেন্টে সম্মানের সহিত অধ্যাপনা করবেন।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে দ্রুত ফিরে আসতে চান।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন খুব তাড়াতাড়ি এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিষয়ক কর্মকর্তা এডভোকেট রঞ্জন কুমার দাশ বলেন, আমরা এখনো জাজমেন্টটা হাতে পায়নি হাতে পেলেই সব বলতে পারব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, আমরা এখনো এ বিষয়ে কোনো আদেশ কিংবা ডকুমেন্ট পায়নি। আদালত থেকে আদেশ আসলে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নিব।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন অধ্যাপক পদে আবেদন করেছিলেন। অধ্যাপক পদে আবেদনের শর্তানুসারে তার জমাপ্রদানকৃত দুইটি আর্টিকেলের বিষয়ে জালিয়াতির অভিযোগে গত ২৬ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে অনুষ্ঠিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৭তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে অপরসারণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই আদেশের বিরুদ্ধে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ এবং বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সম্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমেদের অপসারণের সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জনতে চেয়ে রুল জারি করেন।