বঙ্গবন্ধু খুবই বিজ্ঞানমনা এবং মেধবী মানুষ ছিলেন। তিনি বিজ্ঞানের পড়াশোনাটা বুঝতেন, টেকনিক্যাল পড়াশোনার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবগত ছিলেন। তিনি সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন, সমাজতন্ত্রকে ভালোবাসতেন। বঙ্গবন্ধু ড. কুদরত-ই খুদাকে দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য একটি শিক্ষানীতি প্রস্তুত করেন কিন্তু সে শিক্ষানীতি বাস্তবায়িত করার আগেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত শিক্ষানীতি যদি বাস্তবায়িত হতো তাহলে আমাদের দেশে জঙ্গি তৈরি হতো না।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’ বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল। ভোর বেলা শার্ট ইস্ত্রি করার সময় খবর পেলাম মহান এই নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, যা ছিল চিন্তার বাইরে। এরপরই অশালীন ভাষায় বঙ্গবন্ধুকে গালিগালাজ করে রেডিওতে কথা বলছিলেন মেজর ডালিম।
বিশিষ্ট এই কথাসাহিত্যিক বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগানের আলোকে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ স্লোগানের আবির্ভাব হলো এ দেশে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমরা দেখতে পেলাম, যারা এতদিন আমাদের দেশকে স্বীকৃতি দেয়নি তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিতে থাকল। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, চীন, যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম। এরপর আমরা কী দেখতে পেলাম, যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তারাই দেশের মন্ত্রীত্বের চেয়ারে। এটা ছিল আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় দুঃখের বিষয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে আমাদের দেশকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি যেন ক্ষমতায় থাকতে না পারে সেজন্য দেশি বিদেশি নানা চক্রান্ত চলছেই। এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজের সভাপতি অধ্যাপক ড. হোসেন আরা বেগমের সভাপতিত্বে ও সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার মোন্তাসির হাসানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমেদ।
এছাড়াও আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ইশতিয়াক রেজা, অধ্যাপক ড. লাইসা আহমদ লিসা ও স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজের সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. নাসির উদ্দীন। এসময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।