বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) মূল্যায়নে গত বছরের তুলনায় ১০ ধাপ এগিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তৈরি এই তালিকায় ১০০ নম্বর মধ্যে ৫৯ দশমিক ২৬ নম্বর পেয়ে ৩৪তম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে গত বছর ১৯ দশমিক ৯০ নম্বর পেয়ে ৪৪তম অবস্থান ছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বার্ষিক কর্মসম্পাদনা, সেবা উন্নয়ন ও উদ্ভাবন শাখার সচিব ড. ফেরদৌস জামান এবং এপিএ কমিটির উপ-পরিচালক ও ফোকাল পয়েন্ট বিষ্ণু মল্লিক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই তথ্যটি জানানো হয়েছে।
ইউজিসি সূত্রে জানা যায়, এপিএ মূল্যায়নের এই তালিকাটি ছয়টি বিষয়ে ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে। যেখানে কৌশলগত উদ্দেশ্য বিষয়ে ৭০ নম্বর, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনায় ১০, ই-গভর্ন্যান্স বা উদ্ভাবন পরিকল্পনায় ১০, অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থাপনায় ৪, সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি কর্মপরিকল্পনায় ৩ এবং তথ্য অধিকার কর্ম পরিকল্পনায় ৩ নম্বর রয়েছে।
প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কৌশলগত উদ্দেশ্য বিষয়ে ৪৭ দশমিক ৪৯ নম্বর, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনায় ১ দশমিক ২৪, ই-গভর্ন্যান্স বা উদ্ভাবন পরিকল্পনায় ৪, অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থাপনায় ২ দশমিক ৭২, সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি কর্মপরিকল্পনায় ০ দশমিক ৭১ এবং তথ্য অধিকার কর্ম পরিকল্পনায় ৩ নম্বর মিলিয়ে ৫৯ দশমিক ২৬ স্কোর পেয়েছে।
যেখানে ২০২১-২২ অর্থবছরে শুধুমাত্র কৌশলগত উদ্দেশ্য বিষয়ে ১৯ দশমিক ৯ পেয়েছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া বাকি ৫টি বিষয়ে কোনো নম্বরই ছিলো না এই প্রতিষ্ঠানটির।
এক বছরের ব্যবধানে ১০ ধাপ এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার প্রতিটি দফতরে যাতে সঠিকভাবে কার্যক্রম সম্পাদিত হয় এবং কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত হয় সেজন্য এপিএ পদ্ধতি অবলম্বনের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও তার ব্যতিক্রম নয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন গত বছরে এই বিষয়গুলো প্রাথমিকভাবে বুঝে উঠতে পারেনি। যার ফলে অত্যন্ত নিম্নমান পরিলক্ষিত হয়েছে গত বছর। কিন্তু আমরা বিষয়টি জানার পরপরই এ ব্যাপারে যত্নবান হই। আমাদের এখানে যারা এ বিষয়ে দায়িত্বে ছিল তাদের নিয়ে আমরা কয়েকবার মিটিং করেছি। মিটিং করার পর জিনিসটি আমরা অনেকাংশেই এখন বুঝে গেছি। এর ফলেই একবছরে আমরা ১০ ধাপ এগিয়েছি।
সামনের বছরে পূর্ণাঙ্গ নম্বরের কাছাকাছি নম্বর পাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে উপ-উপাচার্য আরও বলেন, আমরা চাই আমাদের যে প্রকৃত কাজ সম্পাদিত হচ্ছে, সে কাজগুলো সঠিকভাবে তুলেই আমাদের মূল্যায়ন হোক। এক্ষেত্রে যদি সার্বিক উন্নয়ন করতে হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ প্রতিটি শাখার সকলকে সমানভাবে সহযোগিতা করতে হবে। কোনো এক জায়গায় গাফিলতি হলেই কিন্তু আমাদের এই মানটি নিম্নগামী হবে। আমরা এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছি। আমি গতকাল (মঙ্গলবার) সকল ফোকাল পয়েন্ট এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে আলোচনা করে এখানে আমাদের দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছি। আমরা চাই পূর্ণ নম্বরের কাছাকাছি নম্বর পেতে।
প্রসঙ্গত, সেবায় গতিশীলতা আনয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে বর্তমান সরকার ২০১৪-১৫ সালে দেশে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) চালু করে। এর মাধ্যমে সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত, সক্ষমতার উন্নয়ন, সব স্তরের কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন সহজ হবে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।