সরকারি তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থী রাজিব বলেছেন, আমাদের সমস্যা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রো-ভিসি স্যারের সঙ্গে দেখা করতে গেলে বলা হয় আমাদের চেহারা নাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে যায় না।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে টিএসসি অডিটোরিয়ামে ঢাবি অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের একাডেমিক সংকট নিরসনকল্পে ঢাবি ছাত্রলীগের মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হয়ে সরকারি তিতুমীর কলেজের ২০২০-২০২১ সেশনের শিক্ষার্থী রাজিব একথা বলেন।
এই শিক্ষার্থী বলেন, গত দুই মাসে ছোট-বড় ১১টি আন্দোলন করা হয়েছে। ৩ বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিতে পারার জন্য। এটা একটি যৌক্তিক দাবি কারণ আমাদের রেজাল্ট দেওয়া হয় ৯ মাস পর। এরপর ১ মাস ও সময় না দিয়ে আবার পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়। অথচ গত এক বছর এই বিষয়গুলোর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যদি ২-৩ মাসে রেজাল্ট দিয়ে দেয় তাহলে আমাদের আন্দোলন করার প্রয়োজন হতো না।
ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী শেখ আকিবুজ্জামান বলেন, আমরা ঢাবির মত সাত কলেজেও সেমিস্টার পদ্ধতি চাই। আমাদের শিক্ষারমান উন্নয়ন করা হউক। আলাদা রেজিস্ট্রার বিল্ডিং করার মাধ্যমে সাত কলেজকে স্বতন্ত্রভাবে পরিচালনা করা হউক। অতিদ্রুত রেজাল্ট জট নিরসন করা হউক।
আরেক শিক্ষার্থী সাকিব সাত কলেজের এক দফা দাবি তিন বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন জানিয়ে বলেন, আমাদের ফলাফল হয় নয় মাসে অথচ ঢাবিতে দ্রুত ফলাফল দেওয়া হয়। আমাদের এনকোর্স, টেস্ট দেওয়ার পর বলা হয় পূর্বের বছরের সকল পরীক্ষা দিতে। আমরা এর সমাধান চাই।
সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, সাত কলেজের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়, তাদের সঙ্গে সৎ ভাইয়ের মত আচরণ করা হয়। ঢাবির নিজস্ব কোর্স ৪ বছরে শেষ হচ্ছে কিন্তু সাত কলেজের হচ্ছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নানা উপায়ে কামব্যাক করার সুযোগ পাচ্ছে কিন্তু সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে না।
সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের কোর্স শেষ করতে ৭/৮ বছর লেগে জানায় জানিয়ে তিনি বলেন, কখনো কখনো দেখা যায় সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের সিলেবাসই দেওয়া হচ্ছে না। পরীক্ষা হয়ে যায় কিন্তু ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষার সময়ই দেওয়া হয় না। সব মিলিয়ে সব কোর্স শেষ করে তাদের বের হতে ৭/৮ বছর লেগে যায়।
ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানো ছাত্ররাজনীতির প্রধান কাজ জানিয়ে শয়ন বলেন, আমরা যারা ছাত্ররাজনীতি করি তারা সাত কলেজের ছাত্রদের পক্ষে কথা বলছি না। অন্য কেউও বলে না। কিন্তু এটি আমাদের প্রধান কাজ, ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানো।
ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু তনয়া ছাড়া কেউ খোজঁখবর নিচ্ছে না। সবাই সাত কলেজের ব্যাপারে উদাসীন। ছাত্র আন্দোলনের কর্মী হিসেবে আমাদের উচিৎ তাদের পাশে দাঁড়ানো।
সভা সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। এসময় ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ, ঢাবি শাখা বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাসহ সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।