ডাকসু নির্বাচনের মতবিনিময় সভা ১০ জানুয়ারি

বিবিধ, ক্যাম্পাস

ঢাবি করেসপনডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 11:58:12

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র যুগোপযোগী করার জন্য আগামী ১০ জানুয়ারি ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এর আগে এ বছরের ৩১ মার্চকে ডাকসু নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ৷ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হয়ে কিংবা লিখিতভাবে সংগঠনের বক্তব্য বা সুপারিশমালা উপস্থাপনের জন্য ছাত্র সংগঠনগুলোর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শীর্ষ নেতাদের অনুরোধ জানিয়ে পাঠানো এই চিঠির সঙ্গে ডাকসুর বর্তমান গঠনতন্ত্রের একটি কপি পাঠানো হয়েছে৷

সোমবার (৭ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলর কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়। ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, 'আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন পর ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে৷ এ লক্ষ্যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ গঠনতন্ত্র যুগোপযোগী করার জন্যে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের মতামত নিয়ে প্রয়োজনীয় সংশোধনী/পরিমার্জনের সুপারিশ প্রণয়নের জন্য মাননীয় উপাচার্য একটি কমিটি গঠন করেছেন৷ এর নিমিত্তে ছাত্রসংগঠনসমূহের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভা আগামী ১০ জানুয়ারি সকাল ১১টায় উপাচার্য কার্যালয় সংলগ্ন লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত হবে৷'

মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় ছাত্র সংগঠনগুলোকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে৷ ইতোমধ্যেই চিঠি পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ও বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো৷ তবে এ বিষয়ে এখনও অবহিত নয় বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, 'সব দলকে জানানো হয়েছে। আমরা সবার মতামত ও সহযোগিতা চাই।'

ক্যাম্পাসে সব দলের সহাবস্থান নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, 'যারা সুন্দর পরিবেশ রক্ষা করে এবং ছাত্র-বান্ধব রাজনীতি করে তাদের সকলের সহাবস্থান আমরাও মানি এবং আমরাও চাই। এটি গণতান্ত্রিক একটি বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে প্রত্যেকেরই সহাবস্থান রয়েছে এবং তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। তাদের কার্যক্রম যদি সাধারণ শিক্ষার্থীরা গ্রহণ না করে এর দায়ভার তো ছাত্রলীগ নেবে না। তারা ক্যাম্পাসে আসুক, ক্লাস করুক, তাদের কার্যক্রম চালাক এতে আমরা কোনো বাধা সৃষ্টি করব না। যদি ক্যাম্পাসের পরিবেশ বিঘ্নিত না হয়, তাহলে তারা তাদের কার্যক্রম চালাবে। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী কোনো শক্তিকে নিয়ে যদি তারা ক্যাম্পাসে ঢুকে, সেটা সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিহত করতেই পারে।'

ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতিতে ডাকসু নির্বাচনের প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পূর্ণাঙ্গ গণতান্ত্রিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে ডাকসু অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ডাকসু নির্বাচন চাই। যদি এভাবে না হয় তাহলে আমরা ডাকসুর জন্য আন্দোলন করব।'

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, 'ডাকসু নিয়ে মতবিনিময় সংক্রান্ত কোনো চিঠি আমরা পাইনি। আমরা ডাকসু নির্বাচন চাই। কিন্তু ডাকসু নির্বাচনের জন্য যে ধরনের পরিবেশ দরকার তা নিশ্চিত করতে হবে। ক্যাম্পাসে আমাদের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের ছাত্রদলের অনেক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা আছে, তা প্রত্যাহার করতে হবে। ক্যাম্পাসে ক্লাস করতে, পরীক্ষা দিতে গেলে ছাত্রলীগের নেতারা আমাদের মারধর করে। প্রশাসন যেন আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। ডাকসু নির্বাচনের আগে এই বিষয়গুলো প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে।'

এ সম্পর্কে ছাত্র ফেডারেশনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির বলেন, 'মতবিনিময় সভায় তো সবাই অংশগ্রহণ করতে পারবে কিন্তু নির্বাচন হলে সবাই অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না সেটা একটা বিষয়। কারণ, ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নাই। কিছুদিন আগেও আমাদের ওপর হামলা হয়েছে ক্যাম্পাসের জিমনেশিয়ামে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, আমরা চাই যে প্রশাসন যেন অতি দ্রুত তফসিল ঘোষণা করে। যেহেতু তারা আশ্বাস দিয়েছিল মার্চে নির্বাচন হবে, সে অনুযায়ী যেন তফসিল ঘোষণা করে এবং সকল দলের সহাবস্থান নিশ্চিত করা হয়।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর