শিক্ষক লাঞ্ছনায় কুবি শিক্ষক সমিতির জিডি

, ক্যাম্পাস

কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-02-20 15:00:33

প্রায় সাত ঘণ্টা উপাচার্য দপ্তরে অবস্থানের পর নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ও সাবেক কিছু শিক্ষার্থীদের নাম উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষক সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ১টার দিকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় এ জিডি করা হয়।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়, উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পর ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও সাবেক শিক্ষার্থী (ছাত্রলীগ নেতা) ইমরান হোসাইনের নির্দেশে জোর করে উপাচার্যের দপ্তরে প্রবেশ করেন বিবাদীরা। এরপর তারা মারমুখী আচরণ করতে থাকেন। ডেপুটি রেজিস্ট্রার জাকির হোসেন তখন শিক্ষকদের উদ্দেশে বলতে থাকেন, থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দেবো। তখন শিক্ষকেরা প্রক্টরিয়াল বডির সাহায্য চান। কিন্তু প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সহযোগিতা করেননি। উল্টো বিবাদীরা সাত, আটবার মারমুখী আচরণ করেন। এতে শিক্ষকেরা নিরাপত্তাহীন অবস্থায় আছেন।

সাধারণ ডায়েরিতে মোট নয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরো ২০ থেকে ৩০ জনের কথা উল্লেখ করা হয়। উল্লিখিত ব্যক্তিরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেন, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন, বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মো. ইমরান হোসাইন, লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী অনুপম দাস বাঁধন, মার্কেটিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রকিবুল হাসান রকি, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আমিনুর রহমান, ফার্মেসি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ইমাম হোসাইন মাসুম, বাংলা বিভাগের বর্তমান শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন, রসায়ন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম।

এর আগে সোমবার বিকেল চারটায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেন নবনির্বাচিত শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। সে সময় উপাচার্য দপ্তরে বাগবিতণ্ডার আওয়াজ শুনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ও কর্মকর্তারা উপাচার্য দপ্তরে জড়ো হয়। সেসময় শিক্ষকদের সঙ্গে কয়েক দফায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও কর্মকর্তাদের বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুই ঘণ্টা আলোচনা শেষে বেরিয়ে যান। তবে শিক্ষকরা রাত ১০টা পর্যন্ত উপাচার্য দপ্তরে অবস্থান করে সদর দক্ষিণ থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে যান।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, সোমবার আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে গেলে আমাদের ওপর কিছু সন্ত্রাসী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা হামলার চেষ্টা করে। আমরা সে সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চাই এবং তারা সেটা দিতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে আমরা প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করি কিন্তু উপাচার্য আমাদের তার দপ্তরে রেখেই বাসভবনে চলে যান। এতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর ভরসা হারিয়ে সোমবার দিনগত রাত ১টায় (মঙ্গলবার) রাষ্ট্রের প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাধারণ ডায়েরি করেছি।

জিডির তথ্য নিশ্চিত করে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া জানান, বিষয়টির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর