=জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পবিত্র রমজান, শবে কদর, জুমাতুল বিদা, পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে ১৫ দিনের ছুটির ঘোষণা দেয়া হয়েছে৷ রোববার (২৪ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ছুটির ঘোষণা দেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পবিত্র রমজান, শবে কদর, জুমাতুল বিদা, পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে ৩১ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে অফিস বন্ধ থাকবে ৫ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। ছুটি শেষে ১৫ এপ্রিল থেকে ক্লাস ও অফিসের সকল কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে৷ সে হিসেবে এবারে ঈদের পূর্বে প্রায় ১২ দিন ছুটি থাকলেও ইদের পরে মাত্র ৩ দিনের ছুটিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছি চরম অসন্তোষ ও অতৃপ্তি।
এবছর রমজানের শুরু হয়েছে গত ১২ মার্চ থেকে৷ আর চাঁদ দেখার উপর পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর নির্ভর করায় ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ১০ বা ১১ এপ্রিল। সে হিসেবে ঈদের পরে শিক্ষার্থীরা মাত্র তিন বা চারদিন ছুটি পাচ্ছেন। ঈদের পর এতো দ্রুত সময়ের মধ্যে শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর ঘোষণাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হঠকারী সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া এমন সিদ্ধান্তে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে তীব্র অসন্তোষ৷
শিক্ষার্থীরা সাথে কথা বললে তারা জানায়, ঈদের পূর্বে পর্যাপ্ত ছুটি রয়েছে। কিন্তু ঈদের পরে মাত্র ৩-৪ দিনের মধ্যে ক্যাম্পাসে ফিরে আসা খুবই কষ্টসাধ্য বিষয়৷ ঈদ পরবর্তী দ্রুত সময়ে বাস, ট্রেন কিংবা লঞ্চের টিকেট পেতে ভোগান্তি পোহাতে হবে, সাথে গুণতে হবে অতিরিক্ত ভাড়া। বিশেষ করে ১৫ এপ্রিল থেকে সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান একসাথে তাদের কার্যক্রম শুরু করায় তীব্র টিকেট সংকটের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, আবার অনেক বিভাগ ঈদের ছুটির পর পরই পরীক্ষা ও টিউটোরিয়াল উইক ঘোষণা করেছে। এতো অল্প সময়ে ক্যাম্পাসে ফিরে এসে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া কিছুটা কঠিনই বলছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, ছুটির তারিখ পুনর্বিবেচনা করে ঈদের পরে আরও কয়েকদিন ছুটি বাড়ানো হোক। যাতে করে তারা স্বস্তিতে ক্যাম্পাসে ফিরে আসতে পারে।
অসন্তোষ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু নাইম বলেন, ক্যাম্পাসে আসার পর প্রায় প্রতিবছরই রোজার প্রথম সপ্তাহে ঈদের ছুটি ঘোষণা করতে দেখেছি। কিন্তু এবার রোজার বড় একটি সময় শ্রেণি কার্যক্রম চলমান আছে। শ্রেণি কার্যক্রম নিয়ে সমস্যা নেই। কিন্তু ঈদের পর পরই এতো অল্প সময়ের মধ্যে ক্যাম্পাসে ফিরে আসা কঠিন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করা উচিত।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ফারিয়া তাবাসসুম নামের এক শিক্ষার্থী জানান, সারা বছর কোনো খবর থাকেনা, ঈদ-রোজা আসলেই ক্লাস পরীক্ষার মেলা লেগে যায়। ঈদের তিনদিন পর টিকিট তো পাওয়া যাবেই না। যদিওবা পাওয়া যায় সেটার দাম থাকবে দিগুণ-তিনগুণ। ঈদের পর এক সপ্তাহ অন্তত ছুটি দিতে পারত তাহলে এই ভোগান্তিগুলো কম হতো।
এদিকে ছুটি পুনর্বিবেচনার বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার আবু হাসান বলেন, ‘ছুটির সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেটে হয়। পরিবর্তন করতে গেলে আবার সিন্ডিকেট সভা করতে হবে। শিক্ষার্থীরা এ ধরনের সমস্যায় পরতে পারে তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আমাদের জানা ছিল না। এ বিষয়ে আমি উপাচার্যের সাথে কথা বলব।’