চাঁদাবাজির অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন অনিক (২৮) সহ পাঁচ জনকে আসামি করে ঢাকার সি.এম.এম আদালতে মামলা করা হয়েছে। ফয়সাল হেলাল (৩৪) নামে এক ব্যবসায়ী বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
রোববার (০৫ মে) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সূত্রাপুর আমলি আদালতে মামলা করা হয়। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার প্রথম আসামি মহিউদ্দিন অনিক (২৮), দ্বিতীয় সৌরভ হাওলাদার (২৭), তৃতীয় রিপন (২৮), চতুর্থ হাসিবুল হাসান হৃদয় (২৮) এবং পঞ্চম হিমু (২৯) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩ থেকে ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. শাহা আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিগণ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ী ফয়সাল হেলালকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। হেলাল জীবনের ভয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ হতে বিরত থাকে। গত ২৬ এপ্রিল সারাদিন ব্যবসা বাণিজ্য করে তার ব্যবসায়ের বকেয়া পাওনা টাকা থেকে দুই লক্ষ ছত্রিশ হাজার টাকা কালেকশন করে রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার সময় নিজ বাসায় ফেরার পথে ৪২/৪৩, নর্থব্রুক হল রোডে অবস্থিত রাজমহল হোটেলের সামনে পৌঁছানো মাত্র ১নং আসামি মো. মহিউদ্দিন অনিক এর নেতৃত্বে অন্যান্য আসামিগণ বাদীর গতি রোধ করে দাঁড়ায় এবং বাদীর নিকট যা আছে সব দিয়ে দিতে বলে।
বাদী আসামিদের ভয়ে আসামিদের সাথে কথা বলতে বলতে রাজমহল হোটেলের ভিতর ঢুকে যায়। তখন আসামিগণ বাদীর পিছনে পিছনে রাজমহল হোটেলে ঢুকে বাদীকে ঘেরাও করে ধরে বাদীর নিকট থাকা টাকা পয়সা এবং মোবাইল ফোন দিয়ে দিতে বলে। তখন ১ ও ২নং আসামি বাদীকে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে। ১নং আসামি বাদীর পকেটে থাকা দুই লক্ষ উনিশ হাজার টাকা জোরপূর্বক নিয়ে যায়। তখন ২নং আসামি বাদীর নিকট আর কি আছে জানতে চায় ও দিয়ে দিতে বলে। অন্যান্য আসামিগণ বাদীকে বেদম মারপিট করে মারাত্বকভাবে আহত করে ৩নং আসামি তার হাতে থাকা চাকু বেড় করে বাদীকে চাকু দিয়ে আঘাত করতে যায়। তখন বাদীর ডাক চিৎকারে হোটেলে কর্মরত কর্মচারীরা এগিয়ে এসে বাদীকে আসামিদের হাত হইতে রক্ষা করে। ফলে আসামিগণ বাদীর মোবাইল ও মানিব্যাগে থাকা অবশিষ্ট টাকা নিতে পারেনি। কিন্তু যাবার আগে ২নং আসামি আগামী ৭ দিনের মধ্যে বাদীকে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে বলে, অন্যথায় বাদীকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
যেহেতু আসামিগণ পরস্পর যোগসাজশে বাদীকে অবৈধভাবে গতিরোধ করে আটক করে মারধর করে মারাত্মক আঘাত করে আহত করে এবং হত্যা করার চেষ্টা করে বাদীর প্যান্টের পকেট থেকে ২ লক্ষ উনিশ হাজার টাকা জোরপূর্বক নিয়ে নেয়। এবং বাদীর নিকট ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং বাদী এ বিষয়ে কোনো কর্তৃপক্ষের নিকট বিষয়টি জানালে বাদীকে হত্যার হুমকি দেয়। ঘটনার পরে বাদী এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানায় মামলা মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ, মামলা না নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। তাই বাদী বাধ্য হয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয় জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলবো।
এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায় নি।