রাবি ছাত্রলীগের ৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হল প্রহরীকে মারধরের অভিযোগ

, ক্যাম্পাস

রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-05-12 18:36:58

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রহরীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের কয়েক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।

রোববার (১২ মে) সকাল সাড়ে ছয়টায় সোহরাওয়ার্দী হলের গেটে এই ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী এবং ওই হলের নিরাপত্তা প্রহরীর দায়িত্বে আছেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা একই হলের সহ-সভাপতি ও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী এবং মাদার বখ্শ হল ছাত্রলীগ কর্মী শামসুল আরিফিন খান সানি এবং একই বিভাগের মতিহার হল ছাত্রলীগ কর্মী আজিজুল হক আকাশসহ আরও কয়েকজন। অভিযুক্তরা সকলেই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী কর্মচারী মনিরুল ইসলাম বলেন, শনিবার মধ্যরাতের সংঘর্ষে নিয়াজ মোর্শেদকে (শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক) আমি নাকি সহযোগিতা করেছি। এজন্য রোববার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে আতিকের নেতৃত্বে আকাশ, সানিসহ বেশ কয়েকজন আমাকে মারধর করে। তারা আমার হাতে-গালে-মাথায় কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। আমি বিষয়টি হল প্রাধ্যক্ষকে জানিয়েছি। তিনি আমাকে অভিযোগপত্র দিতে বলেছেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী আজিজুল হক আকাশ বলেন, আমরা সকালে হল থেকে বের হওয়ার সময় দেখি ওই কর্মচারী অন্যপাশে হয়ে ফোনে বলছিল, ‘হলে ওরা আসছে, তিনজন ঢুকছে’। এই কথা শোনার আমরা তার ফোন চেক করি তিনি একটি নাম্বারে কথা বলছিলেন। নম্বরটি ট্রু কলারে চেক করে দেখি সেটা নিয়াজ মোর্শেদ ভাইয়ের নাম্বার। শুধু তাকে নয়, সে ছাত্রদল থেকে সবার কাছে তথ্য পাচার করেছে। এরপর তাকে আমরা হল প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকদের হাতে তুলে দিয়ে চলে এসেছি। তাকে কোনো প্রকার মারধর করা হয়নি।

আরেক অভিযুক্ত মাদার বখ্শ ছাত্রলীগ কর্মী শামসুল আরিফিন খান সানি বলেন, না এমন ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা বানোয়াট একটা তথ্য, বিভিন্ন জায়গা থেকে এমনটা শুনতে পাচ্ছি। আমি এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ওই ব্যক্তি তথ্য পাচার করছিল তাই তাকে ওরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাৎক্ষণিক হল প্রাধ্যক্ষ এসে তাকে নিয়ে গেছে।

তবে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, গতকালকের ঘটনার পরে আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাতে হলেই অবস্থান করি। এরপর আজ সকালে আতিকের নেতৃত্বে সানি, আকাশসহ বেশ কয়েকজন হলের গার্ড মনিরুল ইসলামকে প্রচণ্ড মারধর করে। হলের কর্মচারীকে মারধর করা মানে হল প্রশাসনের উপর আঘাত আনা। আমরা আজ প্রভোস্ট কাউন্সিলের মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

প্রসঙ্গত, গতকাল দিবাগত রাতে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব গ্রুপ এবং সোহরাওয়ার্দী হল সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেখানে দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। তিন ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন। সেখানেই নিয়াজ মোর্শেদকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার সন্দেহে সোহরাওয়ার্দী হলের গার্ডকে মারধরের ঘটনা ঘটে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর