আফসানা আরবীর ফোন ফটোগ্রাফির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে সারা ক্যাম্পাসে। ছবি তোলার অ্যাঙ্গেল, কম্পোজিশন সেন্স এবং ছবিতে আলো-আঁধারির কারসাজি স্বতন্ত্র পরিচিতি দিয়েছে তাকে। বিশেষ করে প্রকৃতির (ল্যান্ডস্কেপ) ছবি তোলার কৌশল সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন আফসানা আরবী। এর আগে তিনি চলতিপথে কিংবা অবসরে টুকটাক ছবি তুলতেন।
আফসানা আরবী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।
আরবী বার্তা২৪.কমকে জানালেন, ২০১৯ সাল ছিল তার জীবনে একটা বিভীষিকাময় সময়। এসময় তিনি প্রচণ্ড বিষণ্ণতায় দিন পার করতেন।
আরবী বলেন, ২০২০ সালে একটা নতুন ফোন কিনলাম। এসময় যা চোখে ভালো লাগতো, তারই ছবি তুলতাম। তবে প্রকৃতির (ন্যাচারাল) ছবি তুলতে বেশি ভালো লাগতো।
তিনি বলেন, ফুল আমার অনেক পছন্দের সাবজেক্ট। ফুল দেখলেই মন ভালো হয়ে যেতো। ছিঁড়তে তো পারতাম না, তাই ছবি তুলে রাখতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সর্বপ্রথম যোগ দিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটোগ্রাফি ক্লাবে।
ফটোগ্রাফি ক্লাবের প্রশংসা করে আরবী বলেন, ক্লাবের সবাই অনেক আন্তরিক ও সহানুভূতিশীল! আমি একটু লাজুক ও ভীতু প্রকৃতির হওয়ায় কারোর সঙ্গে তেমন একটা কথা বলতাম না। তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারতাম না।
এসময় ক্লাবের কাজের সুবাদে পরিচয় হয়, আমারই ব্যাচের অন্য ডিপার্টমেন্টের একটা ছেলের সঙ্গে। তার নাম নাঈম। নাঈমকে শিক্ষাগুরু মেনে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আফসানা বলেন, নাঈমই আসলে আমার ফটোগ্রাফির গুরু বলা যেতে পারে।
তিনি আমাকে অনেক টাস্ক (ছবি তোলার কাজ) দিতেন। প্রচুর ছবি দেখাতেন। আসলে খুব সাদামাটাভাবে তিনি আমাকে শেখাতেন ‘রুলস অব থার্ড’, ‘ফ্রেম উইদ ইন ফ্রেম’, ‘গ্রিড লাইন’ ইত্যাদি। তিনি উৎসাহিত করতেন ছবি তুলতে। আমি ছবি তুলে তাকে দেখাতাম। তিনি আমার ছবির ভুল ধরিয়ে দিতেন। এভাবেই বলা চলে, আমার ফটোগ্রাফির ‘রুলস’ (নিয়ম) শেখা।
আরবী বলেন, বর্তমানে আমি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফি সোসাইটির সঙ্গে যুক্ত আছি। ক্লাস শেষে অবসর সময়ে ক্লাবে যাওয়া হয়। মাঝেমধ্যে ছবির কর্মশালায় যোগ দিই। আমার এখনো জানার অনেক বাকি! শেখার অনেক বাকি!
নতুন করে যারা ফটোগ্রাফি শিখতে চান, তাদের উদ্দেশে আফসানা আরবী বলেন, আমার মতো একদম নতুন ফটোগ্রাফারদের যেটা বলবো, সেটা হলো বেশি বেশি ছবি দেখুন। দেখবেন, ধীরে ধীরে ‘ফ্রেমিং’ সম্পর্কে ধারণা চলে আসবে। ছবি তোলার আগ্রহ বাড়বে।
পরিবার থেকে ফটোগ্রাফি করতে কোনো বাধার সম্মুখীন হয়েছেন কি না জানতে চাইলে আরবী বলেন, আমার পরিবার থেকে কখনোই কোনো বাধার সম্মুখীন হইনি তবে উৎসাহও পাইনি তেমন। তবে একটা ফটো এক্সিবিশনে দুটি ছবি সিলেক্ট হওয়ার পর আমার বড়ভাই উৎসাহ দিয়েছেন।
নাঈমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আফসানা বলেন, ফটোগ্রাফিতে যদি বেশি সহায়তার হাত বাড়িয়ে থাকেন, তা হচ্ছেন আমার বন্ধু নাঈম।
ফটোগ্রাফি নিয়ে আমার অনেক দূরে যাওয়ার ইচ্ছে আছে।