জাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেছেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন শেষে অবস্থান কর্মসূচিতে 'আমাদের দাবি মেনে নিয়ে প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার ও জারিকৃত প্রজ্ঞাপন তুলে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফিরবো না। কোন শিক্ষক তাদের দায়িত্ব পালন করবে না। একাডেমিক হোক বা গবেষণা হোক আমরা কোথাও অংশগ্রহণ করবো না। প্রক্টর তার দায়িত্ব পালন করবে না, ডিনরা তাদের দায়িত্ব পালন করবে না, বিভাগের সভাপতি ক্লাসে আসবে না। কিন্তু আমরা আন্দোলন সফল করেই ছাড়বো। আপনারা চাইলে আমরা স্বতন্ত্রভাবে শুধু জাহাঙ্গীরনগরে আন্দোলন জারি রাখবো৷' ৷
তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবির আদায় না হওয়া পর্যন্ত পিছপা হটবো না৷ ৩০ তারিখ থেকে আমরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে যাব। আর ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন ও আন্দোলন করবো৷ আমরা যারা চাকুরী শেষে পেনশন এ যাব আমরা আর কোন পেনশন পাব না। কিন্তু আমরা এ অযৌক্তিক স্কিম এর অন্তর্ভুক্ত হতে চাই না। আমরা তাই শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে সর্বাত্মক আন্দোলন জারি রাখবো৷
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি অনুষদে একযোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। পরে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত সমাজবিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা৷
এসময় পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকেরা দ্রুততম সময়ে পেনশন সংক্রান্ত এ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবি জানান৷
বঙ্গবন্ধু আমাদের যে সম্মান দিয়ে গেছেন তা যেন কেউ বিনষ্ট না করে মন্তব্য করে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, আমরা বেশি কিছু চাই না, আমাদের শুধু চাওয়া সম্মান। দেশ ও জাতিকে শিক্ষিত করার যে গুরুদায়িত্ব আমাদের উপর তা রক্ষার জন্য শিক্ষকদেরকে সম্মানহানি করা যাবে না। অথচ আমাদের যে ফেডারেশন আছে তাদেরকে বাইরে রেখে অত্যন্ত সুচতুরভাবে আমাদেরকে পেনশন স্কিম এর অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেছে। কিন্তু শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকেই এর অন্তর্ভুক্ত করে রেখেছ কিন্তু আমলারা কেউ এর মধ্যে নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা যে সম্মানজনক ভাবে পেনশন পেতাম সেটি যেন আবার ফিরে আসে। আমাদের যে চাওয়া সম্মান সেটি আমরা ফিরে পেতে চাই। এই সরকার এবং রাষ্ট্র যেন আমাদের প্রতি অবিচার না করে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে সম্মান না দিয়ে আধুনিক বাংলাদেশ গড়া যে স্বপ্ন তা সম্ভব না। সরকারের যেন শুভবুদ্ধির উদয় হয়। কারণ শিক্ষকরা যদি রাস্তায় নামে তাহলে এর দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে। আমরা প্রত্যয় স্কিম থেকে বেরিয়ে আসতে চাই।
এছাড়াও গানিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আবদুর রব বলেন, আমরা শিক্ষক সমিতির তত্ত্বাবধানে যৌক্তিক আন্দোলন করে যাব। আমরা আমাদের দাবিতে অটল থেকে আন্দোলন করে যাব।