শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শহীদুর রশীদ ভূঁইয়ার বিরদ্ধে আনা অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) গঠিত তদন্ত কমিটি ২০২০ সাল থেকে বর্তমান অবধি সব আর্থিক ব্যবস্থাপনার যাবতীয় তথ্যসহ উপাচার্যের সন্তান নিয়োগ, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী নিয়োগের সার্বিক তথ্য চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে।
এছাড়াও অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ্রিন হাউস’ নির্মাণ ও আসবাবের টেন্ডার, উপাচার্যের স্ত্রীর গাড়ি ভাড়াসহ সব কার্যবিবরণী চাওয়া হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব গোলাম দস্তগীর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তদন্তে প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। চিঠিতে তিনি বলেন, ‘অভিযোগের ব্যাখ্যা পেয়ে কমিশন তদন্ত কমিটি গঠন করে। আমরা তার উপাচার্য থাকাকালীন সকল কার্যবিবরণী চেয়েছি যেন খতিয়ে দেখতে পারি।’
তদন্ত কমিটি বিস্তারিত তথ্য আগামী ২ জুলাইয়ের মধ্যে বিশেষ বাহক মারফত তদন্ত কমিটির কাছে পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।
চিঠিতে এ পর্যন্ত নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী নিয়োগের সার্বিক তথ্য, উপাচার্যের সন্তান হামিম আল রশীদ, সেকশন অফিসারের সব কাগজপত্রসহ আবেদনপত্র, বিজ্ঞাপনের কপি, কমিশনের অনুমোদন/অনাপত্তিপত্র, বাছাই বোর্ড গঠনের অফিস আদেশ, বাছাই বোর্ড সভার কার্যবিবরণী, আবেদনকারীদের সার-সংক্ষেপ, সিন্ডিকেট সভার কার্যবিবরণী, প্রভাষক পদে ১৭-১১-২০২০ থেকে ২৬-০৬-২০২৪ তারিখ পর্যন্ত নিয়োগের তথ্য চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রিন হাউস নির্মাণ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য; অফিস, ল্যাব, ফার্ম যন্ত্রপাতি ও বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন সরবরাহ সংক্রান্ত তথ্য, ‘রওশন এলিভেটর লি’-কে ১০ কোটি ৪০ লাখ টাকার কার্যদেশ, কার্যাদেশ প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কাজের অভিজ্ঞতা সনদ, লিফট ক্রয়ের পূর্বে বিদেশ গমনকৃত বিশেষজ্ঞ টিমের তালিকা ও প্রতিবেদন, লিফট স্থাপনকৃত ভবনসমূহের তালিকা, বিল পরিশোধ সংক্রান্ত নোটের কপিসহ প্রমাণক তথ্য চেয়েছে ইউজিসি।
সেইসঙ্গে অফিস, ল্যাব ও হলের আসবাবপত্র সরবরাহ সংক্রান্ত তথ্য সহ ‘ডটস ফার্নিচার’-কে ১২ কোটি টাকার ফার্নিচার সরবরাহের জন্য কার্যাদেশ, কার্যাদেশ প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কাজের অভিজ্ঞতা সনদ, রিসিভিং কমিটির কার্যপত্র, বিল পরিশোধ সংক্রান্ত নোটের কপিসহ প্রমাণ, শেকৃবি’র অধিকতর উন্নয়ন (২য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পে উপাচার্যের স্ত্রীর গাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত তথ্য, কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার (২০২১-২২ ও ২০২২-২৩) আয় ও ব্যয়ের বিবরণী (প্রমাণকসহ); উপাচার্যের সরকারি বাসভবনে ১৭-১১-২০২০ থেকে ২৬-০৬-২০২৪ তারিখ পর্যন্ত মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং ইলেকট্রিক সামগ্রী ক্রয় সংক্রান্ত ব্যয় বিবরণী (প্রমাণকসহ) তথ্য চেয়েছে তদন্ত কমিটি।
শেকৃবি রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিম এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা যাবতীয় তথ্যসহ ব্যাখ্যা দিয়েছিলাম। আমাদের কাছে ইউজিসি থেকে যে সব তথ্য চাওয়া হয়েছে, নির্ধারিত তারিখের মধ্যে তা পাঠানোর কাজ করছি’।
উল্লেখ্য, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ, টেন্ডারবাজি, একাডেমিক, প্রশাসনিক এবং আর্থিক অনিয়ম সংক্রান্ত উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক মতামত/সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন প্রদানের জন্য কমিশন কর্তৃক ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।