ঈদের ছুটির পরে আবারও সরকারি চাকুরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন তবে লাইব্রেরি খোলার রাখার দাবি জানান ।
সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করেন তারা। এর আগে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হয়ে মিছিল নিয়ে কলাভবনের সম্মুখে এসে এফবিএস হয়ে ভিসি চত্বর থেকে সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেন।
সমাবেশে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সারজিস ইসলাম বলেন, 'বলা হয়েছিল ৪ জুলাই হাইকোর্ট থেকে আঠারো সালের পরিপত্রের শুনানি দেওয়া হবে। তাই ৪ তারিখ পর্যন্ত আমাদের লাগাতার কর্মসূচি চলবে। ততদিন পর্যন্ত আমরা সকল ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছি।'
তিনি আরও বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্য বিরোধী সব আন্দোলন শুরু হয়েছে সেন্ট্রাল লাইব্রেরি থেকে। কিন্তু প্রত্যয় পেনসন স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষকের কর্মবিরতিতে লাইব্রেরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। লাইব্রেরি বন্ধ থাকবে কেনো? যে জায়গা থেকে শিক্ষার্থীরা সংগঠিত হয় সেটি বন্ধ থাকবে কেন? শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জায়গা ঢাকা পড়বে কেন? এজন্য আমরা সকলে মিলে প্রক্টর স্যারের কাছে আগামীকাল থেকে ঢাবির দুইটি লাইব্রেরি যথাসময়ে খোলা রাখার দাবি জনাবো।'
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান বলেন, 'উচিত ছিল তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকুরিতে কোটার একটি সুরাহা করা। কিন্তু দেখা গেলো হয়েছে এর উল্টো। ১৮ সালে আমাদের যে আন্দোলন সে আন্দোলনের ফসলকে কেড়ে নেয়া হয়েছে।'
এসময় নাহিদ আন্দোলনের চার দফা উপস্থাপন করেন। চার দফা দাবিগুলো হলো-
১. ২০১৮ সালে সরকারি চাকুরিতে সরকার কোটা বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের যে পরিপত্র ঘোষণা করেছিল, সেটি বহাল রাখতে হবে।
২. সরকার যদি সরকারি চাকুরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না। কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে, মেধা অনুযায়ী শূন্য পদগুলো নিয়োগ দিতে হবে।
৩. সরকার যদি কোটা নিয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চায় , সেক্ষেত্রে আঠারোর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করতে হবে।
৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধা ভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, এ সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অফিসে লাইব্রেরি খোলা রাখার বিষয়ে আলোচনা করতে যান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।