অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন 'প্রত্যয় স্কিম’ প্রত্যাহারসহ তিন দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আয়োজনে তৃতীয় দিনের মতো সারাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে সর্বাত্মক কর্মবিরতি।
মঙ্গলবার (৩ জুলাই) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের প্রধান ফটকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাবি শিক্ষকগণ যথারীতি বেলা ১২ টা থেকে ১ টা অব্দি এক ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে কলা ভবনের মূল ফটকে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমার সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলেছেন। এদিকে, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামীকাল সকালেই নেতৃবৃন্দকে নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনায় বসবো আমরা।'
তিনি আরও জানান, আন্দোলন সফল হলে ক্লাসে ফেরার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের হঠাৎ কোন সিদ্ধান্তের ফলে অসুবিধায় না পড়তে হয় সেদিকে আমরা খেয়াল রাখবো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন।
এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় প্রত্যয় স্কিম সংক্রান্ত যে ব্যাখ্যা দিয়েছে সেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি প্রত্যাখ্যান করছে। এবং শিক্ষকদের যৌক্তিক আন্দোলনকে অর্থমন্ত্রী অযৌক্তিক বলেছেন, আমরা সেটিও প্রত্যাখ্যান করছি।
তিনি যোগ করেন, সরকারের অনেকগুলি অঙ্গসংগঠন আছে। আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বলতে চাচ্ছি, আপনারা বিভ্রান্ত করবেন না। বিভ্রান্ত করার সুযোগ এখানে নেই।
তিনি আরও বলেন, একটি বিষয় বার বার পরিষ্কার করে বলছি, আমরা কাউকে জিন্মি করছি না। সন্তানসহ শিক্ষার্থীদেরকে আমরা জিন্মি করছি না বরং তাদের জন্যেই এই আন্দোলন। বরং অর্থ মন্ত্রণালয়ই আমাদেরকে জিন্মি করছে। পাশাপাশি আমাদের কাছে যদি আলোচনায় বসার আহবান আসে, সেক্ষেত্রে আমরা আলোচনায় বসবো। তবে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
প্রসঙ্গত, এদিকে আজও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাশাপাশি কর্মবিরতি পালন করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। এ আন্দোলনে শিক্ষকদের দাবি—প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন। আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন বাতিল।