সরকারি চাকরি, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ৩০ শতাংশ কোটা বাতিল করে মেধা ভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে পদযাত্রা ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তীব্র বৃষ্টিতেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে দেখা যায়। এর আগে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে একটি পদযাত্রা বের করেন তারা।
এসময় শিক্ষার্থীরা আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার। জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে। লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে। আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আইরিন সুলতানা বলেন, আমরা নারী হয়েও নারী কোটা চাচ্ছি না। তাহলে সেই ৫৩ বছর আগের মুক্তিযুদ্ধ করা মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরা কেনো কোটার সুবিধা ভোগ করবে? আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করছি না। তাদের অবদান দেশের মানুষ আজীবন মনে রাখবে। কিন্তু সরকারি চাকরিতে এই ৩০% কোটা বৈষম্য সৃষ্টি করে। আমরা এর দ্রুত সমাধান চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান আমরা কখনো অস্বীকার করছি না। তবে কোটার ব্যবহারের ফলে একটা গোষ্ঠী শিক্ষা, চাকরি এবং সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে আমরা যে সাধারণ শিক্ষার্থী আছি তারা পিছিয়ে যাচ্ছি। এটা এক প্রকার বৈষম্য। যা আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আমাদের কোটার একটি সুষ্ঠু বণ্টন থাকা উচিত। আমাদের দাবি হলো ২০১৮ সালের পরিপত্র যেন পুনর্বহাল রাখা হয়।
এসময় ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ছাত্র ইউনিয়ন ইবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুইট বলেন, আমরা লড়াই করছি বৈষম্যের বিরুদ্ধে। এই সংগ্রাম একদিনের নয়।এই সংগ্রাম ১৯৫২ সাল থেকেই আমরা এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে চলমান রয়েছে। আমার মনে হয় না মুক্তিযোদ্ধারা এই কোটা বৈষম্য টিকিয়ে রাখার জন্য সংগ্রাম করেছেন। তারা দেশে সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্যই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। আমরা কোটা বাতিলের পক্ষে না আমরা কোটা সংস্কারের পক্ষে। মেধার বন্টন যেন সুষ্ঠ হয় সেজন্য আমাদের এই লড়াই সংগ্রাম।