চবিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমাবেশ

, ক্যাম্পাস

চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-07-10 00:00:27

কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে এই সমাবেশের আয়োজন করেন সংগঠনটি।

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর চবি শাখার আহ্বায়ক জশদ জাকিরের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল এর সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া, বৃহত্তর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুদর্শন চাকমা, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ইশা দে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের অভাবে কোটা প্রথার যুগোপযোগী সংস্কার না হওয়ায় চাকরি প্রত্যাশীরা প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে কেউ কেউ সমস্ত কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবি করছেন। বছরের পর বছর ধরে রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের শিকার হওয়া জনগণের এই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া খুব অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু সম্পূর্ণ কোটা প্রথা বাতিল করাও যুক্তিযুক্ত নয়।
২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১১ এপ্রিল’ ১৮ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারী চাকরীতে সকল ধরণের কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন।

তারা আরও বলেন, এই চটকদার সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে প্রতিবন্ধী, সংখ্যালঘু জাতিসত্তা ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে তার নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। ২০১৮ সালে ছাত্রদের দাবি ছিলো কোটা সংস্কারের। অথচ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিকে বিভ্রান্ত করতে সরকারের পক্ষ থেকে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়ে পরিপত্র জারি করা হয়। মাত্র ছয় বছরের মধ্যে হাইকোর্ট সেই পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করে। ফলে কোটা বাতিল কোনভাবেই সমাধান নয় প্রয়োজন কোটার যৌক্তিক সংস্কার। কোটা পদ্ধতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচলিত আছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে অনগ্রসর জাতি, সংখ্যালঘু জাতিসত্তার জন্য কোটা ব্যবস্থা রয়েছে। কানাডায় নারী, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী এবং সংখ্যালঘুদেরকে কোটা সুবিধার আওতায় আনা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা না করেই কোটা বাতিল কিংবা বহালের সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক স্বার্থে দীর্ঘকাল অস্বাভাবিক মাত্রায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখা যেমন বৈষম্য তৈরি করেছে, তেমনি অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীর প্রাপ্য কোটা বাতিলের মধ্য দিয়েও সামাজিক বৈষম্য প্রকট হবে। তাই অনুন্নত জনপদ, অনগ্রসর জাতিসত্তা ও বঞ্চিত শ্রেণীর (কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর ইত্যাদি) সন্তানদের জন্য যৌক্তিক মাত্রায় কোটা সংরক্ষণের মধ্য দিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সফলতা আদায় করতে হবে।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, রাষ্ট্রের এই বিভ্রান্তিকর অবস্থানের বিপরীতে শুধু স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন নয় চাই সচেতন ছাত্র আন্দোলন। একই সাথে কোটা সংস্কারের পাশাপাশি দেশের প্রতিটি নাগরিকের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের অধিকার নিশ্চিতে আপামর ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সামনে রেখে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট চবি দুই দফা দাবি পেশ করে সেগুলো হলো :

১. বৈষম্যমূলক মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করতে হবে।
২. নারী, প্রতিবন্ধী, অনুন্নত জনপদ, অনগ্রসর জাতিসত্তা ও বঞ্চিত শ্রেণীর জন্য যৌক্তিক মাত্রায় কোটা নিশ্চিত করতে হবে।

সমাবেশ শেষে একটি মিছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ঝুপড়ি, প্রশাসনিক ভবন ঘুরে জয় বাংলা চত্বরে এসে সমাপ্ত হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর