ডাকসু‘র প্রার্থী হবেন কারা, সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত সন্ধ্যায়

বিবিধ, ক্যাম্পাস

তপন কান্তি রায় ও সোহানুর রহমান, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 19:30:00

দীর্ঘ ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের তারিখ ১১ মার্চ ঘোষণা করা হয়েছে। এই নির্বাচনের কারা প্রার্থী হতে পারবে? এই বিষয়টি নিয়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের সেই জটিলতা নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকর্তৃক গঠিত ‘ ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধনী কমিটি’র সুপারিশগুলো মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ফোরাম সিন্ডিকেটে উঠবে। এই সিন্ডিকেটেই ডাকসু সকল বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে।

ডাকসু‘র গণতন্ত্র অনুযায়ী নিয়মিত শিক্ষার্থীরাও নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারবেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পর ডাকসু নির্বাচন হওয়ায় বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের দায়িত্বরত ছাত্রনেতারা ডাকসু প্রার্থী হতে চান। সেই সুযোগ দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ক্রিয়াশীল ১৩ সংগঠনের নেতারা দাবি জানিয়েছে। তারা বলছেন, দীর্ঘদিন পর ডাকসু নির্বাচন হওয়ার নির্বাচনে যাতে অংশ নিতে পারেন; সেই সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

এর আগের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ১৩টি ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে কয়েক দফা পরিবেশ পরিষদের সভা করে; সেখানে ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের বিভিন্ন দাবির মধ্যে নির্বাচনে কারা প্রার্থী হবেন-এই দাবির বিষয়ে ছাত্রসংগঠনগুলো কয়েকটি সুপারিশ করেছিল প্রশাসনকে।

ডাকসু নিয়ে ছাত্রসংগঠনেরগুলোর দাবির কতটুকু আমলে নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানতে চাইলে ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বার্তা২৪.কম বলেন, 'এ বিষয়টি সিন্ডিকেট দেখবে। সিন্ডিকেট যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই হবে। সব বিষয়ে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নেবে।

সংগঠনগুলোর দাবি, সান্ধ্যকালীন কোর্স ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয় নিয়মিত শিক্ষার্থী, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্নাস, মাস্টার্স করেছে। এখন অন্য কোন বিষয় মাস্টার্স, এমফিল ও পিএইচডি করছেন তারা যেন ডাকসুর প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পায়।

ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বার্তা২৪.কম বলেন, 'যেহেতু দীর্ঘ ২৮ বছর পর নির্বাচন হচ্ছে,  নিয়মিত ডাকসু নির্বাচন হয়নি; সেহেতু আমরা চাই, যারা নিয়মিত শিক্ষার্থী কাতার থেকে বাদ পরেছেন সেক্ষেত্রে কিছুটা শিথিলতা প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘যারা ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স - মাস্টার্স শেষ করে ডাবল মাস্টার্স বা এমফিল-পিএইচডি করছেন তাদের অন্তর্ভুক্ত করা। আমরা চাই সকলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক।'

তিনি বলেন, 'সেশন বা বয়সের বিষয়ে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে। আর যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স করেনি কিন্তু সান্ধ্যকালীন কোর্স করছে তারা কেন ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে? কেননা তারা তো ওই হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নয়। তবে এটা নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপর। এক্ষেত্রে আমাদের কোনো জোড় দাবি নেই।

ডাকসু নির্বাচনের প্রার্থীদের বয়সসীমা ৩০ বছরের মধ্যে রাখার দাবি জানিয়েছেন  ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির।

তিনি বলেন,  অনেক শিক্ষার্থী অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে এখন এমফিল করছে; যাদের বয়স ৩০ বছরের মধ্যে তারা যেন ভোটার ও প্রার্থী হতে পারে।

ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি শাখার সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'ইভিনিং কোর্সের বিরুদ্ধে; এটা বন্ধ করা হোক। তবে ডাকসুর বিষয়ে দাবি হলো, যারা নিয়মিত ডাকসু ও হল সংসদের ফি প্রদান করে; তারা যেন ডাকসু নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হতে পারে।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ আমরা ইভেনিং কোর্সের বিরুদ্ধে। আমরা চাই, নিয়মিত শিক্ষার্থীরাই যেন ভোটার ও প্রার্থী হতে পারে। তবে অনেকদিন পর যেহেতু ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে সেক্ষেত্রে দাবি হচ্ছে ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থীরা যেন ভোটার ও প্রার্থী হতে পারে।'

তবে ইভিনিং কোর্সের ছাত্রদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেবার দাবি  ছাত্রদলের ঢাবি শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার। তিনি বার্তা২৪.কম বলেন, 'আমরা চাই, যারা ইভিনিং মাস্টার্স করছে তাদের ডাকসু নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক।

তিনি বলেন, 'ইভিনিং কোর্সের ছাত্ররা কেন প্রার্থী হতে পারবে না? তারা যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ ছাত্র; তাহলে কেন তারা প্রার্থী হতে পারবে না?'

এ সম্পর্কিত আরও খবর