পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের এক নেতা। ওই নেতার নাম রাসেল হোসেন রিয়াদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক উপস্কুল ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম গোলাম কিবরিয়া। তিনি সমাজকর্ম বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। গোলাম কিবরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক সহসভাপতি ছিলেন।
সোমবার (১৫ জুলাই) রাত তিনটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গোলাম কিবরিয়া জানিয়েছেন, রাসেল হোসেন রিয়াদ এবং তিনি অনেকদিন ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪০৭ নম্বর রুমে থাকেন। হলের রিডিং রুমে পড়াশোনার জন্য প্রতিদিন রাতে দুইটা-তিনটার দিকে তিনি রুমে আসেন।
সোমবার রাত তিনটায় হলের রিডিং রুম থেকে পড়াশোনা করে রুমে আসেন। এরপর রুমের বাইরে গিয়ে ৫ মিনিট পরে রুমে এলে দেখেন রুমের দরজা বন্ধ। এরপর দরজা খোলার জন্য দরজায় নক করতে থাকলে এক পর্যায়ে রুমের দরজা খুলে রাসেল হোসেন রিয়াদ তার দিকে তেড়ে আসেন। তখন রুমের সামনে থাকা জুতা তুলে নিয়ে কিবরিয়াকে হাত এবং জুতা দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে কিবরিয়ার নাক ফেটে রক্ত বের হলে তিনি দৌড়ে ৩০৪ নম্বর রুমে চলে যান।
এ সময় রাসেল তার ফোনসেটটিও ভেঙে ফেলেন।
গোলাম কিবরিয়া বলেন, রাসেল প্রায় সময়ই রুমে ঝামেলা করতেন। রুমে রান্না করা নিয়ে, রুমে কথা বলা নিয়ে, লাইট জ্বালানো নিয়ে সমস্যা করতেন। মাঝখানে তিনি আমাকে রুম ছেড়ে দিতে বলছেন।
এর আগে ৪০৭ নম্বর রুমে বাংলা বিভাগের এক জুনিয়রকে দা নিয়ে তাড়িয়ে বের করে দিয়েছেন। রাসেল আগেও আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন কিন্তু আজকে গায়ে হাত তুলেছেন, এটা প্রত্যাশা করিনি। আমি প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
অন্যদিকে, ৩০৪ নম্বর রুমের শিক্ষার্থীরা জানান, রাত সাড়ে তিনটার দিকে তারা রুমের দরজায় ধাক্কার শব্দ শুনতে পান। রুম খুলে দেখেন কিবরিয়া রক্তাক্ত অবস্থায় রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তার নাক থেকে রক্ত পেট বেয়ে পড়ছে। পরে তারা দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে কল করে পাবনা সদর হাসপাতালে ইমার্জেন্সিতে ভর্তি করানো হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রাসেল হোসেন রিয়াদ বলেন, যে অভিযোগগুলো করেছে, এগুলো সত্য নয়। কিবরিয়া অনেক রাত পর্যন্ত রুমের বাইরে থাকে। আমরা যেহেতু আমরা রাজনীতি করি আমাদের নিরাপত্তার একটা বিষয় আছে।
আজ রাত তিনটার সময় রুমে এসে দরজা ধাক্কাতে শুরু করলে আমরা ভয় পেয়ে যাই। দরজা খুলে দেখি কিবরিয়া দাঁড়িয়ে আছে আর আমার সঙ্গে উচ্চবাচ্যে কথা বলে। পরে আমাদের মধ্যে হাতাহাতি হয় ও আমাকে আক্রমণ করে। আমার ঠোঁট ফেটে যায়। হাতে ব্যথা পাই। আমি দেখেছি ওর কিছুই হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, আমি হাসপাতালে গিয়ে গোলাম কিবরিয়াকে দেখে এসেছি। হাসপাতাল থেকে ক্যাম্পাসে ফিরলে আমরা এটা নিয়ে বসবো।