কোটা সংস্কার আন্দোলনের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) সমন্বয়কারীকে মারধর করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (১৫ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শেখ হাসিনা হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
মারধর শিকার আন্দোলনকারী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফরহাদ কাউছার।
জানা যায়, হামলাকারীরা শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী এনায়েত উল্লাহ ও আবু সাদাৎ মো. সায়েমের অনুযায়ী। অভিযুক্তরা হলেন- মার্কেটিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রবিন দাশ, একাউন্টিং এন্ড ইনফেকশন সিস্টেমস্ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের রিয়াজ উদ্দিন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আক্তারুজ্জামান পাভেল, মার্কেটিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষেরে আশিকুর রহমান রাফি, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের জুনায়েদ লামিম, গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অর্ণব সিংহ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আসিফ এনতাজ রাব্বি এবং আগামী কমিটির পদপ্রত্যাশী মেজবাহউল হল শান্ত।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, আমি রাতের বাসে কুমিল্লা শহর থেকে টিউশন করে এসে ক্যাম্পাস গেট নামি। এরপর আমাকে কয়েকজন ডেকে নিয়ে যান। তারা আমার ফোন কেড়ে নিয়ে লক খুলতে বলেন এবং জানতে চান, আমি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাথে যুক্ত আছি কি না। আমার ফোন চেক করতে থাকা অবস্থায় রবিন দাশ প্রথমে আমাকে মারধর করতে শুরু করেন। এরপর পাভেল, রাফি, শান্ত, রিয়াজ, রাব্বি আমাকে মারধর করেন।
এই বিষয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুবি শাখার সমন্বয়কদের একজন মো. সাকিব হোসাইন বলেন, 'আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই আজকের সকল কর্মসূচি পালন করেছিলাম। কিন্তু এই যে হামলা, সেটিতে আমরা মর্মাহত। পাশাপাশি তার ফোন চেক করা একপ্রকার সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। আমরা এর যথাযথ বিচার চাই।'
এর বিপরীতে উনাদের কর্মসূচির বিষয় তিনি বলেন, 'আমরা প্রশাসন বরাবর অভিযোগ দিবো। তারা যদি যথাযথ বিচার না করেন, তাহলে আমরা আদালত পর্যন্ত যাব।'
পদপ্রত্যাশী নেতা এনায়েত উল্লাহ জানান, ‘আমি যতটুকু শুনেছি, কালকে রাজাকার স্লোগানের পর ছাত্রলীগ তাদের প্রতিহত করে। আজকেও ওদের সাথে কথা-কাটাকাটির হয়েছে। এক পর্যায়ে ওদের একজনের সাথে মারামারি হয়। আমরা তিন হলের সবাই বিষয়টি নিয়ে অবগত রয়েছি। সকলে বসে একটা সমাধানে আসব।’
কুবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠিক সম্পাদক আবু সাদাত সায়েম জানান, ‘এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেব, যাতে কেউ বঙ্গবন্ধু হলের শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলার সাহস না পায়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমরা এই বিষয় কোনো অভিযোগ পাইনি। এই বিষয়ে অভিযোগ এলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুজ্জামান মিলকী বলেন, আমি এ ঘটনা জানতে পেরেই প্রক্টরিয়াল বডির সাথে উপস্থিত হই। এরপর শিক্ষার্থীদের থামানোর চেষ্টা করি। আমরা আপাতত ঘটনাটি পর্যবেক্ষণে রাখছি।