জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) উপাচার্যের বাস ভবনের অভ্যন্তরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশি হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আচরণ সন্দেহজনক উল্লেখ করে ৬টি দাবি ও পর্যবেক্ষণ উপস্থাপন করেন তারা।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এক জরুরি সিন্ডিকেট ডাক দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর ১ টায় সিন্ডিকেট সভা চলাকালে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে মৌন মিছিল নিয়ে রেজিস্ট্রার ভবন প্রাঙ্গণে জড়ো হয় শিক্ষকরা। এসময় তারা শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে সিন্ডিকেট সভায় হল বন্ধ না দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
মৌন মিছিলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোতাহার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহেদ রানাসহ অন্যান্য শিক্ষকরা অংশ নেন।
তাদের উত্থাপিত দাবিগুলো হলো- ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের নিষিদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে; অধ্যাপক লুৎফুল ইলাহীর সর্বোচ্চ চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, প্রয়োজনে বিদেশে পাঠাতে হবে; ১৫ জুলাই এর ঘটনায় যেসকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, সাংবাদিক, শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে; হল বন্ধ করে দেয়ার মতো সুবিধাজনক সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না৷
এছাড়া উত্থাপিত পর্যবেক্ষণগুলো হলো- প্রশাসন ১৫ জুলাই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলাতে নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণরুপে ব্যর্থ হয়েছে৷ এমনকি প্রশাসনের আচরণ সন্দেহজনক; গতকালের ঘটনা প্রশাসনের ব্যর্থতা বা সন্দেহজনক যাই হোক, আজকের পর কোন শিক্ষক-শিক্ষার্থী হামলার আক্রান্ত হলে প্রশাসনকে সম্পূর্ণভাবে দায়ী করা হবে৷
রেজিস্ট্রার ভবনে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিনা খাতুন বলেন, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনভাবেই বহিরাগতদের নিয়ে ছাত্রলীগ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান নিতে পারে না। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি এই দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের৷
এর আগে সোমবার (১৫ জুলাই) রাতে ১২ থেকে আড়াইটা পর্যন্ত ৪ দফায় পুলিশের উপস্থিতিতে ভিসি ভবনের অভ্যন্তরে আন্দোলনকারী ও উপস্থিত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ৷ এরপর সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রলীগ ও ভাড়াটে বহিরাগতদের ধাওয়া করলে তার পিছু হটতে বাধ্য হয়৷
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোনো প্রকার সাহায্য না করার অভিযোগ এনে উপাচার্য বাসভবনে ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা৷ একপর্যায়ে পুলিশ বাধা দিতে আসলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হয়। তখন পুলিশ টিয়ারশেল, ছররা গুলি ও রাবার বুলেট ছুঁড়তে থাকে শিক্ষার্থীদের ওপর৷ এতে ১জন শিক্ষক ও অন্তত ৫ জন সাংবাদিক মারাত্মক আহত হন৷ এছাড়া প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর হতাহতের ঘটনা জানা গিয়েছে৷