ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সকল কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাংশ। তাদের প্রধান দাবি (কোটা সংস্কার) পূরণ হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানান তারা।
এদিকে গোয়েন্দা সংস্থার নাম ভাঙিয়ে তাদের ডেকে নিয়ে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্বাক্ষরকারী এক শিক্ষার্থী। পাশাপাশি বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের কেউ না উল্লেখ করে এ বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে মূল সমন্বয়কেরা।
সোমবার (২৯ জুলাই) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে আসে যেখানে কোটার যৌক্তিক সংস্থার করে প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ায় তারা কর্মসূচী প্রত্যাহার করছেন বলে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, যৌক্তিক আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মহামান্য আদালত কোটা সংস্কারের পক্ষে রায় প্রদান করেন। সরকারের নির্বাহী বিভাগ তা অনুসরণ করে ৯ম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেড পর্যন্ত ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে ও ৭ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারী করে। শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি ছিল মেধার ভিত্তিতে যুক্তিসংগত কোটা সংস্কার করা। প্রধান দাবিটি পূরণ হওয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ থেকে বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনের সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করলাম। সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করে কোটা সংস্কার আন্দোলন কোন রাজনৈতিক বা স্বার্থান্বেষী মহলের আন্দোলন নয়। যারা নাশকতা, ভাংচুর ও অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করবে তাদের সাথে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
আন্দোলন প্রত্যাহার করে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা শিক্ষার্থীরা হলেন আইন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এনামুল হক ইমন, ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আব্দুর রহমান, ইশতিয়াক আহমেদ, ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তানভীর আল যুবাইর তামিম, অর্থনীতি বিভাগের তন্ময় কুমার সাহা, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এস বি বাধন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের আরাফাত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের জুবায়ের এবং সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে একজন বলেন, ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান স্যার আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম বলে আমার নাম ডিজিএফআই তে গেছে বলে জানান। তিনি আমাদের দাবি ও ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা করবেন বলে সাক্ষাত করতে বলেন। আমি আজকে গেলে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা শেষে এই বিবৃতি ধরিয়ে দিয়ে সাক্ষর করতে বলে। সাইন না করে আসতে দিবে না এটাই স্বাভাবিক। আমি স্পষ্ট করে বলেছি আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করতে আসিনি। আমি গেছি এক উদ্দেশে অথচ করিয়ে নিলো আন্দোলন প্রত্যাহার।
অন্যদিকে আন্দোলনের প্রত্যাহারের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য সমন্বয়করা।
জানতে চাইলে ইবি সহকারী সমন্বয়ক সায়েম আহমেদ বলেন, এধরণের বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেছে তারা আমাদের কেউ না। আমরা কোনমতেই শহীদদের রক্তের সাথে আপস করছি না। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া অব্দি আন্দোলন চলবে। এ বিষয়ে আমরা লিখিত বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছি।
ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, এই বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেছে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ না, তাদেরকে আমি চিনিওনা। অযাচিতভাবে হল বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার্থীশূন্য করে আন্দোলন রুখে দেওয়ার অপচেষ্টা করছে প্রশাসন। তবে জেলা শহরের সাথে সমন্বয় করে আমাদের কর্মসূচী চলবে।