কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষদের গণহারে গ্রেফতার, মামলা, জুলুমও নির্যাতনের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) নিপীড়ণ বিরোধী শিক্ষক সমাজ।
এ ছাড়া এ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী দুই শতাধিক নিহত ও হাজার হাজার মানুষের আহত হওয়ার ঘটনায় শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছে শিক্ষকবৃন্দ। নিহত ও আহত প্রত্যেক পরিবার যেন ন্যায় বিচার পায়, তা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানায় নিপীড়ণ বিরোধী শিক্ষক সমাজ।
উল্লেখ্য, কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শেরেবাংলা নগর থানায় গত ২১ জুলাই করা মামলায় শেকৃবি'র ২০ জন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করে যে মামলা করা হয়েছে তা একটি মিথ্যা, বানোয়াট ও হয়রানিমূলক মামলা। অবিলম্বে এ মামলাসহ সারাদেশে শিক্ষার্থীদের নামে সকল মামলা প্রত্যাহার করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
শেকৃবি শিক্ষার্থীদের নামে করা পুলিশের এ মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, 'কোটা সংস্কার দাবিতে ১১ জুলাই বিকেলে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের রক্তাক্ত ও জখম করে এবং তাদের কর্তব্য কাজে বাধা প্রধান করে'।
কোটা অন্দোলনকে কেন্দ্র করে এ ধরনের কোনো ঘটনা শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত হয়েছে বলে জানা নেই, বরং কোটা আন্দোলনে দেশব্যাপী নানান অস্থিরতার সময় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে আলাদা ও শান্ত ছিল বলে অভিহিত করেন।
শিক্ষক সমাজ মনে করে শিক্ষার্থীদের হামলায় পুলিশ সদস্যদের আহত হওয়ার যে ঘটনা সাজানো হয়েছে, তা বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর এ ধরনের সাজানো নাটক বন্ধ করার আহ্বান জানান শিক্ষক সমাজ। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে যথাযথ ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ করেন নিপীড়ণবিরোধী শিক্ষক সমাজ। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সংকটকালীন মুহূর্তে শিক্ষার্থীরা যেন আর কোন ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকার ও প্রয়োজনে ছাত্র-ছাত্রীদের আর্থিক ও মানসিক কষ্ট লাগবের জন্য একটি বিশেষ সেল গঠনের কথা বলেন শিক্ষকরা।
এছাড়া কোটা সংস্কার অন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী যে অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে, তা বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সরকারের নিকট দাবি জানায় শিক্ষক সমাজ।
কোটা সংস্কারের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ চালিয়ে যাওয়া ছাত্রদের অহিংস আন্দোলনকে যারা উসকানি দিয়ে সহিংস করলো, তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা, দেশব্যাপী ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বিনা উস্কানিতে রাবার বুলেট, টিয়ার সেল, জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে হামলা করে বিনা বিচারে যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করার জন্য সরকারের নিকট আহ্বান জানান শিক্ষক সমাজ।
এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহকে অবিলম্বে খুলে দিয়ে হলে হলে ছাত্রদের সহাবস্থান নিশ্চিত করার জন্য সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসকদের নিকট আহ্বান জানায় শিক্ষক সমাজ। চলমান কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যেসব শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানায় শিক্ষকবৃন্দ।