৯ দফা দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন দুই শিক্ষক। শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুর আড়াইটায় ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত হয়ে তারা সংহতি জানান।
এদিকে আগামীকাল শনিবার (৩ আগস্ট) বেলা ১১টায় ‘নিপীড়ন ও বৈষম্য বিরোধী সচেতন শিক্ষক সমাজ’ ব্যানারে শিক্ষকরা প্রতিবাদ র্যালি ও সংহতি সমাবেশ করবেন বলে জানান তারা।
এর আগে আন্দোলনে নিহতদের মাগফেরাত কামনায় জুমার নামাজ শেষে দুপুর দুইটার দিকে কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় মসজিদের খতীব আশরাফ আলী খান মুনাজাত পরিচালনা করেন। এসময় আলকোরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দীন মিঝি, বিভাগরটির অধ্যাপক ও শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম জাকির হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন শাখার কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন খান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
দোয়া শেষে শিক্ষার্থীরা মসজিদ প্রাঙ্গন থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেবনা’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘লাশের হিসাব কে দেবে, কোন কোটায় দাফন হবে’, ‘আগে দে লাশের হিসাব, তারপর সংলাপ’, ‘শেইম শেইম, ডিক্টেটর’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে সেখানে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক এস এম সুইট ও সহ-সমন্বয়ক ইয়াসিরুল কবির সৌরভসহ অন্যরা বক্তব্য দেন।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন এবং আল-কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দিন মিঝি উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে আগামীতে কর্মসূচি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মাঠে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, আমরা সবসময় বলে এসেছি আমাদের ভাইদের লাশের ওপর দিয়ে কোন সংলাপ নয়। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলমান থাকবে।
অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, কোটা আন্দোলনের সময় যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে সে সময় আমি ঢাকায় ছিলাম। আমি জুলাইয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য এ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। আমি চোখের সামনে মিরপুর ১০ নং এ যে হত্যাকাণ্ড দেখেছি তা বাংলাদেশে অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। বিচার বাংলাদেশেই না হলে ছাত্রসমাজ তার ভাইদের প্রতি শতভাগ বেইমানী করবে। আমি নিজে দেখেছি সেদিন মিরপুর ১০ এ কী ঘটেছিল, কেমন করে ঘটেছিল। বারবার বলা হচ্ছে মেট্রোরেলে আগুন দেওয়া হয়েছিল। কোন প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীরা মেট্রোরেলে উঠেছিল আমি নিজের চোখে দেখেছি। ছাত্রদের এখানে দোষ দেওয়ার কোনো সুযোগ নাই।