জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রক্টর ড. আলমগীর কবিরের পদত্যাগের পর তার স্থলে সাময়িকভাবে স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. রুবেল। এছাড়া শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল ও ফজিলতুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ পদ থেকে প্রাধ্যক্ষদ্বয়ের পদত্যাগের পর সাময়িক দায়িত্ব পেয়েছেন যথাক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবদুছ ছাত্তার এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আফসানা হক।
বুধবার (৭ আগস্ট) ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান স্বাক্ষরিত ভিন্ন ভিন্ন বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের প্রভোস্ট এবং পরিসংখ্যান ও উপাত্ত বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর কবীরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে প্রভোস্টের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানপূর্বক উক্ত হলের ওয়ার্ডেন ও দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবদুছ ছাত্তারকে সিন্ডিকেটের তারিখ হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উক্ত হলের প্রভোস্টের সাময়িক দায়িত্ব প্রদান করা হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ৭ আগস্ট ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফজিলতুন্নেসা হলের প্রভোস্ট ও লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ছায়েদুর রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে প্রভোস্টের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানপূর্বক উক্ত হলের ওয়ার্ডেন এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আফসানা হককে আজ সিন্ডিকেটের তারিখ হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উক্ত হলের প্রভোস্টের সাময়িক দায়িত্ব প্রদান করা হলো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নিয়োগ বিষয়ক অন্য এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং পরিসংখ্যান ও উপাত্ত বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর কবীরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করা সাপেক্ষে তাকে প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানপূর্বক এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. রুবেলকে সিন্ডিকেটের তারিখ হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ করা হলো।
এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন দায়িত্ব প্রাপ্তরা সকলেই প্রচলিত নিয়মে সুবিধাদি ভোগ করবেন।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে চলা কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলতি বছরের ১৫ জুলাই মধ্যরাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ প্রায় দেড় শতাধিক আহত হন। এ ঘটনার সময় প্রক্টর আলমগীর কবির তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
এদিকে সরকার পতনের পরপরই গত সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ পত্র জমা দেন তিনি। তার পদত্যাগের বিষয়ে আন্দোলনকারী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, গতকাল সরকারপ্রধানের পদত্যাগের পর প্রক্টর বুঝে গেছেন, তার আর এই পদে থাকা সম্ভব হবে না। তাই তিনি তড়িঘড়ি করে পদত্যাগ করে বাঁচতে চেয়েছেন। প্রক্টর যে অন্যায় করেছেন, তাতে শুধু পদত্যাগ করলে হবে না, তাকে চাকরিচ্যুত করতে হবে।