বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও পরবর্তীতে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) উপাচার্যসহ দুই উপউপাচার্য, প্রক্টরিয়াল বডি, সকল আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষরা, আবাসিক শিক্ষক, ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রেস প্রশাসক। এতে কার্যতই প্রশাসন শূন্য হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। স্থবির হয়ে আছে শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বেড়েছে সেশন জটের শঙ্কা।
এমন পরিস্থিতিতে উপাচার্য নিয়োগের দৌড়ে কে কার পেছনে- এমন নেতিবাচক প্রতিযোগিতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এমনকি বিগত সময়ের মতো এখনও পারস্পরিক কাদা ছিটানোর সংস্কৃতিও শেষ হয়নি। এই সময়েও লক্ষ্য করা যায় সম্ভাব্য প্রার্থীরা একজন আরেকজনের ভুল ধরায় ব্যস্ত। এমনকি কেউ কেউ সম্ভাব্য প্রার্থীদের নেতিবাচক বিষয়গুলোও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যে তুলে ধরছেন।
এসব বিষয় নিয়ে শনিবার (৩১ আগস্ট) জাতীয়তাবাদী শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) হল দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। সাম্প্রতিক সময়ে পতিত ফ্যাসিবাদের দোসর কিছু শিক্ষক গত ১৬ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রশাসনিক লেভেলে অংশগ্রহণ না করেই এখন তারা ভিসি প্রোভিসি হওয়ার জন্য বিভিন্ন রকমে দৌড় ঝাঁপ দিচ্ছেন। এবং তারা নিজেদেরকে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন, অথচ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের পক্ষে শিক্ষক ঐক্যের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানানোর পরও তারা অপারগতা প্রকাশ করেন। এখন ভিসি-প্রোভিসি হওয়ার জন্য তারা মরিয়া।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকদের প্রশ্ন যারা বিগত দিনে সরকারি বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করে টাকা কামিয়েছেন, পতিত সরকারের আজ্ঞাবহ ছিলেন, প্রশাসনিক কোনো দক্ষতা না থাকার পরও শুধুমাত্র ভিসি-প্রোভিসি হতে চাইছেন। তারা কখনও ছাত্রদের বিপদে ছিলেন না আজ তারা শুধুমাত্র উচ্চতর ডিগ্রী দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রোভিসি হতে চাওয়ায় সাধারণ শিক্ষকদের মধ্যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে এবং প্রশাসনিক স্থবিরতাও দেখা দিয়েছে।
সেখানে আরো বলা হয়, ফ্যাসিবাদী সরকারের অন্যায় অত্যাচার ভোগ করেছিলাম তখন তারা পাশে থেকে ফ্যাসিবাদের সমর্থন যুগিয়েছিল। বর্তমানে চবিতে সহস্রাধিক শিক্ষক রয়েছেন। তাদের সকলকে ম্যানেজ করতে প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ সকল মহলের নিকট গ্রহণযোগ্য ভিসি প্রয়োজন।
গ্রেড-১ অথবা সিলেকশন গ্রেডের সিনিয়র অধ্যাপককে ভিসি না বানিয়ে জুনিয়র কাউকে বানালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মত এত বড় প্রতিষ্ঠান সকলকে নিয়ে চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।
সুতরাং, আমাদের দাবী হল বিদেশি ডিগ্রির পাশাপাশি প্রশাসনিক দক্ষতা সিনিয়রিটি জুনিয়রিটি দেখে প্রয়োজনে বিগত দিনের কর্মকাণ্ডের গোয়েন্দা রিপোর্ট নিয়ে যোগ্য, দক্ষ বয়স ও প্রশাসনিক দক্ষতা বিবেচনায় নিয়ে ভিসি-প্রোভিসি নিয়োগ দিলে দীর্ঘদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আমরা মনে করছি।