নতুন বাংলাদেশের জাতি, ধর্ম ও বিশ্বাসের ঐক্যের নিদর্শন নিয়ে সংকলিত বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনী 'একতার আলোয় বাংলাদেশ' আয়োজন করছে সদ্য আত্মপ্রকাশিত 'একতার বাংলাদেশ'।
আগামী ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টায় রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। অনুষ্ঠানে সকল ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতিনিধিবৃন্দ ও ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। প্রদর্শনীটি চলবে ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর দুপুর আড়াইটা থেকে রাত আটটা অব্দি।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ আয়োজনের কথা জানান সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
এ সময় সংগঠনটির মুখপাত্র তাহমীদ আল মুদ্দাসসীর লিখিত বক্তব্যে বলেন, " 'একতার বাংলাদেশ' এর মূল লক্ষ্য অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের রূপরেখা প্রণয়ন। আর সেই উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়েই 'একতার বাংলাদেশ' এবার আয়োজন করতে যাচ্ছে 'একতার আলোয় বাংলাদেশ'- শীর্ষক নতুন বাংলাদেশের জাতি, ধর্ম ও বিশ্বাসের ঐক্যের নিদর্শন নিয়ে সংকলিত বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনী।"
বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের সময়, আমাদের পূর্বপুরুষেরা স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বহুত্ববাদী বাংলাদেশের। সেই ধারাবাহিকতায় স্বাধীন বাংলাদেশের পথে সকল সংগ্রামে, '৫৭ থেকে '৭১ অব্দি, সকল ধর্ম, বর্ণ, মত ও পথের মানুষ বহুজনের বাংলাদেশের স্বপ্নকে বুকে নিয়েই একসাথে রাস্তায় নেমেছে। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে বিগত স্বৈরাচারের শাসনামলে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ও বিপক্ষের শক্তি নামক দুটি কল্পিত বর্গে নামে বিভাজনের রাজনীতি দীর্ঘকাল বাংলাদেশের মাটিতে চালানো হয়েছে। তৈরি হয়েছে সাম্প্রদায়িক ও আদর্শিক দূরত্ব। কিন্তু তারপরও '২৪ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে স্বপ্নের সেই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাম্প্রদায়িক ও আদর্শিক সকল পরিচয়ে উর্ধ্বে গিয়ে সবাই একই স্বপ্ন নিয়ে সংগ্রামে নেমেছে। সবাই চায় বৈষম্যহীন সাম্যের বাংলাদেশ।
মুখপাত্র তাহমীদ বলেন, '২৪ এর ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থান, তার পরবর্তী সাময়িক সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা ও মানবসৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতিতে দেশের এই ক্রান্তিকালে প্রকটভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে সকল চিন্তার মানুষকে একসাথে কাজ করার অজস্র দৃষ্টান্তের। সবার লক্ষ্য কেন্দ্রিভূত হয়েছে সাম্যে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায়। সেই পটাতনে দাঁড়িয়েই '২৪ -এর অভ্যুত্থান ও তার পরবর্তী ক্যামেরাবন্দি কিছু ঐক্যের মুহূর্তকে সকলের সামনে একই ছাদের নিচে তুলে ধরতেই আমাদের এই আয়োজন। সেই সাথে আমরা শুনতে চাই সকল মত-পথের মানুষের একই সাথে এই সংগ্রামে কাজ করার সময়ে আপনার অভিজ্ঞতাগুলোকে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে স্বৈরাচারের পতন পরবর্তী আন্তঃসপ্ত ও আন্তঃরাজনৈতিক সম্প্রীতি, সংহতি ও সংলাপের লক্ষ্যে কাজ করার উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে 'একতার বাংলাদেশ'। জনপরিসরে একতার বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৪ আগস্ট, শাহবাগ মোড়ে 'সম্প্রীতি সমাবেশ' আয়োজনের মাধ্যমে। উক্ত সমাবেশে বাংলাদেশের সকল প্রধান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ও প্রাজ্ঞ পণ্ডিতগণ অংশ নেন ও বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি স্বপক্ষে তাদের অবস্থান পরিস্কার করেন। একই সাথে উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বেশ কিছু অনাকাক্ষিত অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী ঘটনার তীব্র নিন্দা ও সেগুলো নিয়ে অপপ্রচার ও অপরাজনীতি করার চেষ্টার বিরুদ্ধে অবস্থান পরিষ্কার করা হয়। উপোরিউক্ত অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। প্রধান ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনগুলো।
উল্লেখ্য, এ সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আহবায়ক প্লাবন তারিক এবং সদস্য রাগীব আনজুম ও আবরার হোসাইনসহ অন্যান্যরা।