বাণিজ্য মেলার জন্য দখলকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার মাঠ পুনরায় ফিরে পেতে মানববন্ধন করেছে রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে বাণিজ্যমেলার মাঠ সংলগ্ন রাস্তায় মানববন্ধন করেন তারা।
দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্য মেলার জন্য মাঠটি ব্যবহার হলেও এখন পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে দাবিকৃত এই মাঠটি। বাণিজ্য মেলার জন্য সাময়িক ব্যবহারের জন্য মাঠটি এরশাদ সরকার কর্তৃক নেয়া হলেও তা পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়কে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে না বলেও জানা যায়।
মূলত ব্রিটিশ সরকার ঢাকায় “The Bengal Agriculture Institute” (বর্তমানে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) স্থাপনের জন্য ১৯২০ খ্রিঃ ১৫/১৯১৯-২০নং এল এ কেইস এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের জন্য ২৯৮.৪৮২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে যা ১০৯ নং ডিক্লারেশনের মাধ্যমে ৩রা জানুয়ারি ১৯২০ সালে কলকাতা গেজেটভূক্ত হয়।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠানের মতামতকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানটির জায়গা অধিগ্রহণ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। সর্বশেষ প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বস্থ গবেষণার মাঠটি অস্থায়ীভাবে বাণিজ্যমেলার জন্য ব্যবহার শুরু করে। এসময় ছাত্রদের একটি আবাসিক হল ও কৃষি খামার সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় তৎকালীন বাংলাদেশ এগ্রিকালচার ইন্সটিটিউট (বর্তমানে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়)। বর্তমানে বাণিজ্য মেলা স্থানান্তরিত হওয়ায় এবং গণভবনের নিরাপত্তার বিষয় না থাকায় গবেষণা মাঠটি পুনরায় ফিরে পেতে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ।
মানববন্ধনে অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহনণের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং দ্রুতই এই জমিটি গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান। অধ্যাপক ড. রজ্জব আলী বলেন, মাঠটি একসময় আমাদেরই ছিলো। স্বৈরাচার এরশাদের সময় আমাদের কৃষি কলেজের মাঠটি কেড়ে নেয়া হয়। আমাদের হল, মসজিদ, পোল্ট্রি খামারও এখানেই ছিলো। এছাড়াও আমাদের শিক্ষার্থীরা সংখ্যায় এখন অনেক বেড়েছে। স্নাতকোত্তর, পিএইচডি উচ্চতর গবেষণার জন্যও আমাদের মাঠটি অতীব প্রয়োজন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক অধ্যাপক রাশেদুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, মূলত কৃষি বিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার জন্য জমির প্রয়োজনীয়তা বেশি থাকলেও আমাদের প্রয়োজনের বিপরীতে গবেষণা ফিল্ডের অনেকটা ঘাটতি রয়েছে। এজন্য আমাদের গবেষণার প্রয়োজনীয়তায় বাণিজ্য মেলার মাঠটি ব্যবহার করার দাবি জানিয়েছি। তাছাড়া আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণা দেশের কৃষি, অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে ভূমিকা রাখবে। তাই সরকার যদি শেকৃবির চাহিদা এবং দাবির কথা বিবেচনা করে এবিষয়ে পজিটিভ চিন্তা করে তাহলে সামগ্রিক অর্থে দেশের স্বার্থ রক্ষা হবে বলেই আমরা মনে করছি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি দেশের দক্ষিণ-পুর্বাঞ্চলের বন্যার পুর্নবাসনের জন্য শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো ধান ও সবজির চারা প্রস্তুতকরণে এ মাঠেই কাজ শুরু করেছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।